অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় প্রায় ডুবতে বসেছে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। আখাউড়া উপজেলাসহ পাশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগরের কিছু এলাকা নিয়ে কয়েক লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান এই হাসপাতাল। পর্যাপ্ত ডাক্তার থাকা সত্যেও বহিরাগতদের দিয়ে চলছে হাসপাতালটি। দিনের দিন ডাক্তারদের স্বেচ্ছাচারিতা ও চিকিৎসার নামে প্রতারণা বেড়েই চলেছে বলে রোগীদের অভিযোগ। শুধু তাই নয়, খোদ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজেও নিয়মিত অফিস করছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার নিরিহ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা। আজ সোমবার সরেজমিন খোজ নেয়ার সময় এই তথা জানাগেছে।
সকাল সাড়ে ১১টায় সরেজমিন গিয়ে দেখাগেছে, আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোথাও ডাক্তার নেই। রোগীদের প্রচন্ড ভীড়। তারেক আহাম্মদ ভুইয়া নামে একজন বহিরাগত ডাক্তার জরুরী বিভাগে রোগী দেখছেন। তিনি বলেছেন, তার চাকুরীস্থল বিজয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। একজন ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে তার বদলে তিনি রোগী দেখছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শফিউর রহমানের অফিস কক্ষ খোলা পড়ে আছে কিন্তু তিনি নেই। কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে দুপুর আড়াইটায় তিনি ফোন রিসিভ করে জানান, তিনি ছুটিতে আছেন, ঈদের ছুটিতে ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসাসেবা সামাল দেয়ার জন্য ব্যক্তিগত ভাবে ডাক্তার তারেক আহাম্মদকে ম্যানেজ করে আনা হয়েছে বলে জানান।
এদিকে সরেজমিন খোজ নেয়ার সময় চতুর্থ শ্রেণীর কয়েকজন কর্মচারীকে দেখা গেলেও সব ডাক্তারের কক্ষ তালাবদ্ধ ছিল। জরুরী বিভাগে বহিরাগত তারেক আহাম্মদ ভুইয়ার সহকারী হিসাবে দুইজনকে পাওয়া গেলেও তারাও বহিরাগত বলে জানিয়েছেন।
সাংবাদিক দেখে কয়েকজন এগিয়ে এসে জানান, ঈদের পরের দিন কয়েকজন কর্মচারী থাকলেও এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন চিকিৎসা সেবা ছিলনা, ঈদের দিন ডাক্তার কর্মচারী কেউ ছিলনা বলেও জানান।
এদিকে সাংবাদিকরা ছবি উঠাতে গেলে বহিরাগত ডাক্তার তারেক আহামেদ ভুইয়া ক্ষেপে উঠেন। চিকিৎসা ব্যবসা ব্যহত হওয়ায় তিনি রাগ সামলাতে না পেরে এক পর্যায়ে চেয়ার ছেড়ে সাংবাদিককের উপর তেরে আসেন। তবে সাংবাদিকদের চিনতে না পেরে এমন আচরণ করেছেন বলে তিনি জানান। বিনা পয়সায় চিকিৎসাপত্র লিখছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। খবর নিয়ে আরো জানাগেছে, আখাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নায়েব আলী ভুইয়ার পুত্র তারেক আহাম্মদ ভুইয়া মূলত ঈদ উপলক্ষ্যে এখানে এসে নিজস্ব কিছু রোগী দেখছেন। সরকারী ভাবে তাকে এখানে আনা হয়নি।
আখাউড়া পৌরসভার মেয়র হজ্জ যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ডাক্তারদের দায়িত্ব অবহেলা ও অনিয়ম সম্পর্কিত অনেক অভিযোগ তার কাছেও এসেছেন। ওমরা হজ্জ থেকে এসে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলেও তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামছুজ্জামন বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি। কেউ অনিয়মে জড়িত থাকলে ছাড় পাবে না।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com