ব্রেকিং

x

আখাউড়ায় কাস্টমসকে ‘ম্যানেজ করে’ আসছে ঈদ পোশাক

বুধবার, ২৯ মে ২০১৯ | ১০:৫৭ অপরাহ্ণ

আখাউড়ায় কাস্টমসকে ‘ম্যানেজ করে’ আসছে ঈদ পোশাক

ঈদকে সামনে রেখে আখাউড়া স্থলবন্দরে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেদারছে পোশাক আসছে। কারবারিরা  কাস্টমসকে ম্যানেজ করে প্রতিদিনই লাখ লাখ টাকার তৈরি পোশাক নিয়ে আসছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
অভিযোগ উঠেছে, কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট শান্তি বরণ চাকমা ও ইন্সপেক্টর রাজিব রায় যোগদানের পর থেকে এই বন্দর নিয়ে পোশাক আসা শুরু করে অহরহ। এখন ঈদকে সামনে রেখে কাস্টমসকে ম্যানেজ করে পোশাক আসা ওপেন সিক্রেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কাষ্টমস সুপার শান্তি বরণ চাকমা বলেছেন, আখাউড়া স্থলবন্দরে রাজস্ব ফাকি দেয়ার সুযোগ নেই।
এদিকে এ বন্দরে সরকারি নির্ধারিত ‘ভ্রমণ কর’ ফাঁকি দিয়ে যাত্রী পারাপার হচ্ছে দেদারছে। এক্ষেত্রেও কাস্টমসকে ম্যানজ করা হচ্ছে। বিশেষ করে বন্দর দিয়ে নিয়মিত আসা-যাওয়াকারিরা ভ্রমণ কর পরিশোধ করে না করে যাতায়াত করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্থলবন্দরে গিয়ে কথা বলে জানা গেছে, কাস্টমসকে ম্যানেজ করে পোশাক আনছে ঢাকা, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়িরা। ভারত থেকে তারা নিয়ে আসছেন শাড়ি, থ্রিপিস, পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন মালামাল। এছাড়া আনা হচ্ছে কসমেটিকস আইটেমও।
একাধিক সূত্র জানায়, যারা নিয়মিত এ ধরণের পণ্য নিয়ে আসছেন তাদেরকে স্থানীয়ভাবে ‘লাগেজ পার্টি’ বলা হয়। একেকজন ব্যবসায়ি দুইজন তিন করে সাথে লোক নিয়ে ট্রলি বোঝাই করে পণ্য নিয়ে আসছেন। এ ক্ষেত্রে তাদের ট্রলিতে বিশেষ ধরণের চিহ্ন দেয়া থাকে। ওই চিহ্ন দেখলে বাংলাদেশের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদেরকে শুল্কের আওতায় আনেন না। এর বিপরীতে ব্যক্তিগতভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, স্থলবন্দর সংলগ্ন বাসিন্দা এক যুবলীগ নেতা ও তার ছেলে প্রতিদিনই এ বন্দর দিয়ে ভারতীয় তৈরি পোশাক নিয়ে আসছেন। যুবলীগ নেতা ইতিমধ্যেই তার বাড়ির সামনে কাপড়ের দোকান খুলেছেন। তার এখান থেকেও পাইকারি কাপড় বিক্রি হয়।
অভিযোগ উঠেছে, রাজীব রায় যোগদানের পর থেকেই কারবারিরা পণ্য আসার সুযোগ পায়। রাজিব রায়ের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের মলাইশ গ্রামে। প্রতিদিন এ কর্মকর্তার আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত ঘনিষ্ট লোকজন ভিসার মাধ্যমে এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে আসা-যাওয়া করলেও তাদের অনেকেরই ‘ভ্রমণ কর’ পাঁচশত টাকা দিতে হয় না। কর্মকর্তার এই স্বজনপ্রীতির কারণে এখানেও সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
জিন্নাত মিয়া, তানিম মিয়াসহ কয়েকজন জানান, কিছুদিন যাবত আখাউড়া স্থলবন্দরে রাজস্ব কর্মকর্তার কক্ষে দালালের উৎপাত বেড়েছে। কবির ও রুবেল মিয়া দু’জনেই রাজস্ব কর্মকর্তার ঘনিষ্টজনের সহায়তায় ভারত থেকে ফিরে আসা ভ্রমণকারী অনেকের অতিরিক্ত মালামাল আটক রেখে পরে রফাদফার মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। মালামালের বড় চালান আসলে তা কাগুজে কলমে না দেখিয়ে আটকে রাখেন। পরবর্তীতে রাজস্ব কর্মকর্তা রাজিব রায়ের জেলা শহরের পাইকপাড়ার বাসায় দেখা করে রফাদফার পর এসব মালামাল ছাড়িয়ে নেন অনেকেই।
তবে কাস্টমস ইন্সপেক্টর রাজিব রায় এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ৪ এপ্রিল যোগদানের পর রাজস্ব ও ভ্রমণ কর আদায় বেড়েছে।’ কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট শান্তি বরণ চাকমাও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।



আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!