ব্রেকিং

x

আখাউড়ার ইয়াছিন মাষ্টারের উন্নত চিকিৎসা চলছে। ২দিনে শারিরিক অবস্থার উন্নতি

সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯ | ১০:৩১ অপরাহ্ণ

আখাউড়ার ইয়াছিন মাষ্টারের উন্নত চিকিৎসা চলছে। ২দিনে শারিরিক অবস্থার উন্নতি

আখাউড়া থানা প্রশাসনসহ বিভিন্ন মানুষের সহযোগীতায় গতকাল রোববার থেকে পুরোদমে ঢাকায় ইয়াছিন মাষ্টারের উন্নত চিকিৎসা চলছে। এই দুইদিনের চিকিৎসায় ইয়াছিন মাষ্টারের শারিরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে তার পুত্রবধু মিনা বেগম জানিয়েছেন।


তিনি আরো জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিবার ইয়াছিন মাষ্টারকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার পর তার বিভিন্ন শারিকি পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে গতকাল রোববার সকাল থেকে ইয়াছিন মাষ্টারের পূর্নাঙ্গ চিকিৎসা শুরু হয়। গত দুইদিনের চিকিৎসায় ইয়াছিন মাষ্টারের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। প্রস্রাব, পায়খানা নিয়মিত হচ্ছে, খাবার খেতে পারছে এবং কথা বলার চেষ্টাও করছে। আগে নিয়মিত প্রস্রাব, পায়খানা ও খাবার খেতে পারেনি। কথা বলা বন্ধ ছিল। শরীরের পোকাগুলো সরানো হয়েছে। ক্ষত চিহ্নগুলোও উন্নতির দিকে।


এদিকে মিনা বেগম আরো জানায়, ইয়াছিন মাষ্টারের সেবাযত্ন ও তার পাশে থাকায় তাকে প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছে ইয়াছিন মাষ্টারের কুলাঙ্গার সন্তান সাহেল খান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তার ক্ষতি করার জন্য সাহেল খান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ঢাকায় লোকও পাঠাতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। তবে পুলিশ প্রশাসন, সাংবাদিক ও গ্রামবাসী তার পাশে থাকায় তাদের হুমকিকে আমলে না নিয়ে শ্বশুরের সেবাযত্নে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিনা বেগম। তিনি ইয়াছিন মাষ্টারের চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় আখাউড়া থানার অফির্সার ইনর্চাজ রসুল আহমদ নিজামী, পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিকসহ সকল সহায়তাকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাত তলার ৭০১ কেবিনে চিকিৎসা চলছে ইয়াছিন মাষ্টারের।

উল্লেখ্য যে, বিত্তশালী তিন পুত্র সন্তানদের অযত্ন আর দায়িত্ব অবহেলায় আখাউড়া ধাতুরপহেলা গ্রামের ইয়াছিন মাষ্টার দীর্ঘদিন ধরে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রহর গুনছিল। তার তিন পুত্র সাহেল খান, সোহেল খান ও রাসেল খান বাড়িঘর, ফসলি জমি ও পেনশনের সমস্ত টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে ইয়াছিন মাষ্টারকে নি:স্ব করে চলে যায়। পরে এই শোকে ব্রেইন স্ট্রোক হয়ে ইয়াছিন মাষ্টার অসুস্থ্য হয়ে পড়লে সন্তানরা তার খবর নেয়নি, এমন কি তার চিকিৎসা খরচ পর্যন্ত দিতে রাজি হয়নি। তার পুত্রবধু মিনা বেগম ঘরের কিছু মালামাল ও তার স্বর্ণালংকার বিক্রয় করে কিছুদিন চিকিৎসা খরচ চালায়।

এদিকে চিকিৎসা করানোর অপরাধে মিনার স্বামী সাহেল তার অনুমতি ছাড়া যুদ্ধাপরাধী মামলায় ফাসির সাজাপ্রাপ্ত আসামী আখাউড়া নয়াদিল গ্রামের মোবারক হাজী ওরফে দুম্মা হাজীর সম্পর্কে চাচাতো বোনকে বিয়ে করে বিদেশে পাড়ি জমায়। পরে ইয়াছিন মাষ্টার বিনা চিকিৎসায় ধুকতে থাকে। অবস্থার অবনতি হতে থাকে। মিনা বেগম টানা ৮ বছর ইয়াছিন মাষ্টারের সেবাযত্ন করলেও অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে পারছিল না। সন্তানরাও বাবার খবর নিতে রাজি হয়নি। এই অবস্থায় খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিভিন্ন অনলাইন ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার করলে মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়। ইয়াছিন মাষ্টারের চিকিৎসার জন্য মানুষ সাহায্য সহযোগীতা শুরু করে। পরে গত শুক্রবার স্থানীয় সাংবাদিক ও গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে আখাউড়া থানার অফির্সার ইনর্চাজ রসুল আহমদ নিজামী ইয়াছিন মাষ্টারের চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহন করেন। তিনি চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে শনিবার ইয়াছিন মাষ্টারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। তার উন্নতি চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ঢাকায় চিকিৎসকদের সাথেও কথা বলেন।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!