ব্রেকিং

x

১২ বছর ধরে শিকলে বাঁধা বাসন্তি

মঙ্গলবার, ০৬ মার্চ ২০১৮ | ১১:৩৬ অপরাহ্ণ

১২ বছর ধরে শিকলে বাঁধা বাসন্তি

চুরির অভিযোগে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় এক যুগ ধরে শিকল দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখা হচ্ছে বাসন্তি নামের এক নারীকে। এতে করে নানা রকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগছেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বাসন্তিকে ছেড়ে দিলে অন্যের জিনিসপত্র চুরি করে। চুরি না করলেও অন্যের কিছু হারালে অপবাদ সইতে হয় তাদের।


দেবীডুবা ইউনিয়নের লক্ষীরহাট-ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বাসন্তি রানীদের নিজের ভিটে বাড়ি ৮ শতক জমি ছাড়া আর তেমন কিছু নেই । বৃদ্ধ হরিপদ কর্মকারের দুই মেয়ে এক ছেলের মধ্যে বাসন্তি দ্বিতীয়। অনেক কষ্টে কামারের পেশায় যা সামান্য আয় তা দিয়ে চলে তাদের সংসার। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়াও করেছিলেন বাসন্তি। এরপর ২০০৫ সালে বড় বোন গীতা রানীর বিয়ের পর তাকে হত্যা করা হয়। বড় বোনের খুনের ঘটনায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন সে সময়ের অষ্টাদশী বাসন্তি। এরপর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিচর্যা সংক্রান্ত একটি প্রকল্পের চাকরিও নেন তিনি। পরে রাজশাহীতে চলে যান ট্রেনিংয়ে। ট্রেনিং থেকে ফিরেই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। মাঝে মাঝে তার মৃগী রোগ দেখা দিত বলে জানান পরীবারের লোকজন। এরপর মানুষের বাড়িতে চুরি করছে এই অপবাদে ২০০৬ সাল থেকে বাসন্তিকে দিনের বেলা বেঁধে রাখা হচ্ছে বাড়ির পাশে একটি কাঁঠাল গাছে। পায়ে শিকল পরা অবস্থায় নিজেকে সুস্থ দাবি করলেন ওই নারী। এছাড়া নিজের নাম-ঠিকানা লিখতে পারেন বলেও তিনি জানান।


প্রতিবেশীরা জানান বাসন্তিকে পাবনা মানসিক হাসপাতালেও নেওয়া হয়েছিল, তবে সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মানসিক সমস্য নেই বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।

প্রতিবেশী শিউলি আক্তার জানান, ‘বাসন্তিকে দিয়ে সকালে ওর ছোট ভাইয়ের বৌ কিছু গৃহস্থলি কাজ করিয়ে নেয়। ভাল করে কাজ করতে পারে না। তারপর বেঁধে রাখে সারাদিন। মেয়েটির জন্য আমাদেরও কষ্ট হয়।

বাসন্তির বাবা হরিপদ কর্মকার জানান, ওকে ছেড়ে দিলে মানুষের অভিযোগের জন্য আমরা বাড়িতে থাকতে পারি না। মানুষের অভিযোগের জন্য বেঁধে রাখতে হয়।’

দেবীডুবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমি বাসন্তিকে বছরের পর বছর শেকল দিয়ে বেঁধে রাখার বিষয়টি জানতাম না। আমি খোঁজ খবর নিয়ে শিকল খুলে দেয়াসহ তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো।

সুত্র: বিডি প্রতিদিন

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!