ব্রেকিং

x

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোবাইলে আপত্তিকর ছবি দেখে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা

মঙ্গলবার, ২৩ জুন ২০২০ | ৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোবাইলে আপত্তিকর ছবি দেখে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা

বিশ্বজিৎ পাল বাবু:
নিজেদের সম্পর্ককে পাকাপোক্ত করার পরিকল্পনা থেকে প্রেমিকা রোজিনার ছোট বোনকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন মো. লোকমান মিয়া। তবে লোকমান মিয়ার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক থাকার বিষয়টি জেনে যান রোজিনার স্বামী খোকন মিয়া। স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার প্রতিশোধ নিতে শ্যালককে নিয়ে লোকমান মিয়াকে হত্যা করেন তিনি।


ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের। হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পর পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার শ্রীঘর গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে লোকমান মিয়ার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে। মাত্র সাত ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে। পরে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের লেবদ আলীর ছেলে খোকন মিয়া এ ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।


পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, খোকন মিয়ার স্ত্রী রোজিনা সৌদি আরব ও লোকমান মিয়া ওমান থাকেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি লোকমান মিয়া দেশে আসেন। রোজিনার পরামর্শ মতো তার বোন শিউলীকে বিয়ে করতে চান লোকমান। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে গত ১০ জুন লোকমান নাসিরনগর থেকে বিজয়নগরে কালাছাড়া গ্রামে রোজিনার বাবা আব্দুল কাইয়ুমের বাড়িতে আসেন। রোজিনার স্বামী খোকন ও লোকমান রাতে এক ঘরেই থাকেন।

আরও পড়ুন: গাঁয়ের বধূ শহরে ছিনতাইকারী; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক গ্রামেই এক হাজার নারী!

লোকমানের মোবাইল ফোন চার্জে থাকার সুবাদে সন্দেহবশত ফোনটি হাতে নেন খোকন। ফোন হাতে নেয়ার পরই তার স্ত্রীর সঙ্গে লোকমানের মোবাইল ফোনের আলাপচারিতার অডিও ও ভিডিও রেকর্ড দেখতে পান। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লোকমানকে খুন করার পরিকল্পনা করেন খোকন। বিষয়টি শ্যালক শুক্কুর আলীকে জানান তিনি। রাতে লোকমানকে কথা বলার জন্য ঘর থেকে বাইরে ডেকে এনে লাঠি দিয়ে আঘাত হানেন খোকন। এক পর্যায়ে তিনি মাটিয়ে লুটিয়ে পড়লে শ্যালক শুক্কুর শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। বিষয়টি রোজিনার বাবা আব্দুল কাইয়ুমকে অবহিত করা হলে তিনি বাড়ির পাশে মাটিতে লাশ পুঁতে ফেলার নির্দেশ দেন। কথা মতো বস্তাবন্দি করে লাশ বাড়ির পাশে পুঁতে ফেলা হয়।

এদিকে ছেলেকে না পেয়ে নূরুল ইসলাম ১৪ জুন নাসিরনগর থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। এক পর্যায়ে খুঁজতে খুঁজতে ২০ জুন পরিবারের লোকজন বিজয়নগরে আসেন। এ সময় কথার ছলে খোকন জানায়, লোকমান তার শ্যালিকাকের বিয়ের জন্য প্রস্তাব নিয়ে এসে চলে যায়। বিষয়টি বিজয়নগর থানা পুলিশকে অবহিত করেন লোকমানের স্বজনরা। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে সন্দেহভাজন হিসেবে লোকমান আটক করলে জিজ্ঞাসাবাদে সব ঘটনা খুলে বলে। ২০ জুন রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লাঠি, ওড়না উদ্ধার করেন। ২১ জুন বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিফ জুডিশিয়াল তৃতীয় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন খোকন।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নতুন করে আরও ২৪ জন করোনায় আক্রান্ত

বিজয়নগর থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান জানান, নিজেদের সম্পর্ককে পাকাপোক্ত করতেই রোজিনা তার বোনকে বিয়ের জন্য লোকমানকে প্রস্তুাব দেন। আত্মীয়তার সুবাদে লোকমানকে সৌদিতে তার কাছে নিয়ে যাবে বলেও জানায়। কিন্তু রোজিনাদের বাড়িতে যাওয়ার পর লোকমান ও রোজিনার মধ্যে মোবাইল ফোনের কথা বার্তায় খোকনের সন্দেহ হয়। সন্দেহবশত মোবাইল ফোন দেখে স্ত্রীর কিছু আপত্তিকর ছবি নজরে আসে। এতে ক্ষুব্দ হয়েই সে হত্যাকাণ্ড ঘটনা। এ ঘটনায় লোকমানের বাবা নূরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!