ব্রেকিং

x

আখাউড়া হাসপাতালে ডাক্তারদের ছত্রছায়ায় দালালদের দৌরাত্মে বিঘ্ন ঘটছে চিকিৎসা সেবা

শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ | ২:৪৫ অপরাহ্ণ

আখাউড়া হাসপাতালে ডাক্তারদের ছত্রছায়ায় দালালদের দৌরাত্মে বিঘ্ন ঘটছে চিকিৎসা সেবা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালাল ও ওষধ কোম্পানী প্রতিনিধিদের অত্যাচারে রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। অভিযোগ রয়েছে খোদ ডাক্তারদের ছত্রছায়ায় এসব দালাল চক্র এখন সক্রিয়।


খোজ নিয়ে জানা যায়, আখাউড়া উপজেলাসহ পাশের বিজয়নগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের কয়েক লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে। প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন অসংখ্য মানুষ। অল্প খরচে মানসম্পন্ন সেবা লাভের আশায় মানুষের ভিড় জমে এখানে কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এখানে দালাল ও ওষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের অত্যাচারে চিকিৎসা সেবার বিঘ্ন ঘটছে। বিশেষ করে গ্রাম থেকে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা দালালদের খপ্পড়ে পড়ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, চিকিৎসা নিতে আসা গ্রামের মানুষগুলোকে বিভিন্ন ধরণের কথা বলে ভুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দালাল চক্রের সদস্যরা উপজেলার মানহীন কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এই হাসপাতালকে কেন্দ্র করে বৈধ-অবৈধ ২০টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ২টি ক্লিনিক গড়ে উঠেছে আখাউড়ায়। দালালরা এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে টাকা বিনিময়ে কাজ করে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দালালদের দৌরাত্ম এখানে।
তারা আরো জানান, একজন রোগী যখন ডাক্তারের কক্ষ থেকে বের হন, তখন থেকেই রোগীর পিছু নেয় দালাল চক্র। নানা কৌশলে রোগী ও তার স্বজনদের হাত থেকে চিকিৎসাপত্র কেড়ে নেয় তারা। চিকিৎসাপত্র নিতে পারলেই রোগীরা জিম্মি হয়ে যায় দালাল চক্রের কাছে। তখন দালালের পছন্দমত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রোগীদের যেতে বাধ্য করা হয়। এখানকার চিকিৎসকের সহকারীরাও এই দালাল চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। অনেক সময় সহকারীরা ডাক্তারের চিকিৎসাপত্র রোগীর হাতে না দিয়ে সরাসরি তুলে দেয় দালাল চক্রের হাতে এবং বলেন দালাল চক্রের সঙ্গে গিয়ে চিকিৎসকের দেওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করিয়ে চিকিৎসককে দেখিয়ে যেতে।



খোজ নিয়ে জানা যায়, বেশির ভাগ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বৈধতা নেই। নেই দক্ষ লোকবল ও উন্নতমানের যন্ত্রপাতি। চিকিৎসা নিতে আসা গ্রামের সহজ-সরল রোগীদের প্যাথলজি পরীক্ষা ও আধুনিক চিকিৎসার নামে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।
অন্যদিকে নিজ কোম্পানীর ঔষধ বিক্রি করতে প্রায় অর্ধশত বিক্রয় প্রতিনিধি ঘুরে ডাক্তারদের ধারে ধারে। রোগী বের হলেই ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানি শুরু করে তারা। চিকিৎসকরা তাদের দেখানো ঔষধ লিখছে কিনা সেটাই তাদের লক্ষ্য। মুমুর্ষ রোগীরাও তাদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পায়না। অভিযোগ রয়েছে, নানা সুযোগ সুবিধা কমিশন পেয়ে চিকিৎসকরা লিখছেন অখ্যাত মানহীন কোম্পানী ঔষধ। এই সমস্ত অনিয়মের কারণে সেবা প্রত্যাশীরা সরকারী হাসপাতালে বিনা মূল্যের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: হিমেল খান বলেন, চিকিৎসকদের ছত্রছায়ায় দালালরা সক্রিয় ও স্বাস্থ্য সহকারীরা দালালদের সঙ্গে যুক্ত এটা সঠিক নয় তবে দালাল নির্মুল করতে চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, যেসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তাররা বসে সেখান থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে কেউ কেউ আসে। তিনি বলেন, সপ্তাহে দুইদিন রোববার ও বুধবার ওষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা আসে এখানে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিষয়টি দেখবেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তবে কেউ ব্যক্তিগত ভাবে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানান।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!