পিতা হারা, মায়ের কোল ছাড়া দুলেনার আর্থিক অস্বচ্ছলতা ঘুচাতে শিক্ষা জীবনে অণুপ্রেরণা যুগাতে শিক্ষায় উৎসাহী জীবনকর্মে সংগ্রামী দুলেনার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন অতিরিক্ত ডিআইজি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএমবার। ভিক্ষা নয় কর্ম আর শিক্ষা, জীবন সংগ্রামে অনন্য দীক্ষায় ব্যতিক্রমী এই মেধাবী শিশু শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের দুশ্চিন্তা কাটাতে পুলিশ সুপার মানবিক গভীর আন্তরিকতায় দুলেনা আক্তারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দুলেনাকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সংভাদটি পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্সণ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন দুলেনার পরিবারের খোঁজ খবর নেন। জীবন সংগ্রামে শত বাঁধা অতিক্রমকারী ৩য় শ্রেণী থেকে ৪ র্থ শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হওয়া দুলেনার পড়াশোনার তথ্যাদী নিয়ে গতকাল পুলিশ সুপার কার্যালয়ে দুলেনাকে ৪ র্থ শ্রেনীতে ভর্তি সহ পড়ালেখার উপকরণের জন্য আর্র্থিক সহায়তা প্রদান করেন পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএম বার। এসময়ে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, ও দুলেনার নানা মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএমবার জানান, শিশুকাল থেকেই বাবা মা আদর থেকে বঞ্চিত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশন রোডে নানানানী আশ্রয়ে থাকা শিশুটি জীবন যুদ্ধে সংগ্রামী। নানা নানীর অস্বচ্ছল সংসারে বোঝা হয়ে নয়, জীবিকা নির্বাহে তাদের কর্মে সহায়তা করছে দুলেনা।শিক্ষার প্রতি অদম্য আগ্রহে স্কুলে ভর্তি হয়ে অধ্যয়নেও সে মনোযোগী অগ্রগামী। এমনই জীবন সংগ্রামীদের প্রতিভা বিকাশে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। মানবিক সহায়তা অণুপ্রেরণায় সহযোগিতায় এইসব শিশূরাই দেশের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হতে পারবে।
এদিকে দুলেনা পুলিশ সুপারের আদর স্নেহ পেয়ে খুব খুশী হয়েছে। দুলেনা জানায়, এসপি স্যার আমাকে অনেক আদর করেছেন, স্কুল ড্রেস কেনার জন্য আর্তিক সহায়তা দিয়েছেন। পুলিশ দেখলে আগে ভয় পেতাম,দূরে থাকতাম আজ পুলিশের বড় অফিসে গিয়ে অনেক আদর পেয়েছি।আমি খুব খুশী।
দুলেনার নানী জুবেলা খাতুন নাতনীর খুশী মুখ দেখে খুশীতে কেঁদে ফেলেন আদর করে বুকে আগলে ধরেন এবং বলেন আমার নাতিন এতিম। সে খুব ভাল । তার লেখাপড়ার আগ্রহ দেখে স্কুলে ভর্তি করেছি আমরা। সেও আমাদের কাজে নিজ আগ্রহেই সহায়তা করে। তিনি পুলিশ সুপারের আদর স্নেহের কথা উল্লেখ করে বলেন, এমন সুযোগ তার জীবনে আসবে তা ভাবিনি কখনো। তিনি বলেন যারা এতিম অসহায়ের সহায়তায় এগিয়ে আসেন তাদেরকে মহান আল্লাহ সহায়তা করবেন। আমি প্রাণ ভরে এসপি সাহেবের জন্য দোয়া করি।
দুলেনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শহরের কাজীপাড়াস্থ পৌর আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেগম শাহীনুর জানান, দুলেনা স্কুলের ভাল ছাত্রী সে নিয়মিত প্রতিদিন স্কুলে আসে এবং পড়া লেখায় কোন ফাঁকি নেই। স্কুলের শেষ পিরিয়ড পর্যন্ত সে থাকে। তিনি বলেন স্কুলের সরকারী সকল প্রকার সহযোগিতা সে পায়। বই বেতন সবকিছুই বিনামূল্যে নামমাত্র পরীক্ষা ফি দিতে হয়। দুলেনার শিক্ষা উপকরণ ড্রেস ইত্যাদীর জন্য এবং তার লেখাপড়ায় উৎসাহ দিতে পুলিশ সুপার গভীর আন্তরিকতায় যে ভূমিকা রেখেছেন তা প্রসংশনীয় এবং অণুকরণীয়। এমনই স্নেহ ভালবাসায় অস্বচ্ছল শিক্ষার্থরা সামনে অগ্রসর হতে উৎসাহও সাহস পাবে।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com