ব্রেকিং

x

নৃশংস খুনের ঘটনা

মাদ্রাসা ছাত্রের দেহ মসজিদে, মাথা ল্যাট্রিনে

শনিবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ

মাদ্রাসা ছাত্রের দেহ মসজিদে, মাথা ল্যাট্রিনে

রংপুর নগরীর ভগিবালাপাড়া এলাকায় নিখোঁজ এক হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্রকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ গতকাল তার মস্তকবিহীন লাশ মসজিদ থেকে এবং মাথা ল্যাট্রিনের ট্যাংকি থেকে উদ্ধার করেছে। এই ছাত্রের নাম হাফেজ তানভীর আবদুল্লাহ তালহা (১৩)।


জানা গেছে, বেলা ১২টায় ভগিবালাপাড়া জামে মসজিদের ল্যাট্রিনের ট্যাংকি থেকে লাল কাপড়ে মোড়ানো হাফেজ তানভীরের মাথা উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে একই মসজিদের দোতলা থেকে চটে মোড়ানো মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করা হয়। সে ভগিবালাপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন রহমানিয়া নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। সে কোরআনে হাফেজ হয়েছিল। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাগড়ি পরানোর মাধ্যমে তাকে হাফেজ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ছিল। বুধবার বিকাল থেকে তার সন্ধান মিলছিল না। তানভীরকে কী কারণে এবং কারা নৃশংসভাবে হত্যা করছে— সে ব্যাপারে কোনো ক্লু বের করতে না পারলেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নয়জনকে আটক করেছে। তারা হলেন ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মেহেদী হাসান, সহকারী শিক্ষক হাফেজ ইমরান হোসেন, ছাত্র আজহার আলী, মানিক মিয়া, রেজাউল করিম, আরমান হোসেন, ফেরদৌস আহমেদ এবং মসজিদের মুয়াজ্জিন তাজকিরুল ইসলাম ও খাদেম নাজমুল হক। পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তানভীরের বাবা খানজাহান আলী রংপুর সেনানিবাসে সার্জেন্ট পদে কর্মরত। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে রহমানিয়া নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিং থেকে ৫০০ গজ দূরে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। তিন ছেলে মেয়ের মধ্যে তানভীর ছিল সবার বড়। তাকে কোরআনে হাফেজ বানানোর জন্য এক বছর আগে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে ভর্তি করান। তানভীর মাদ্রাসার বোর্ডিংয়ে থাকলেও খাবার খেত বাড়িতে গিয়ে। মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সামছুল হক বলেন, বুধবার আসরের নামাজের পর প্রতিদিনের মতো বাড়িতে নাস্তা খেতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি তানভীর। বিষয়টি তার বাবাকে জানানো হয়। সবাই মিলে বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর করে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, তানভীর দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খুব মেধাবী ছিল। সে মাত্র ১৩ বছর বয়সে কোরআনে হাফেজ হয়েছে। এটা খুব কম জনই হয়। তানভীরের বাবা খানজাহান আলী বলেন, বিষয়টি জানার পর আমার গ্রামের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা এবং শ্বশুরবাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জসহ সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তানভীরের সন্ধান না পেয়ে পরদিন সকালে কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল মিঞা জানান, জিডি করার পর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান সাইফের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে মাদ্রাসা সংলগ্ন ভগিবালাপাড়া জামে মসজিদের দোতলার তালা ভেঙে ভিতর থেকে চট দিয়ে মোড়ানো তানভীরের মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করে। আর গতকাল বেলা ১২টায় মসজিদের ল্যাট্রিনের ট্যাংকি থেকে মাথাটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আটক নয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যার কারণ এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত তা শিগগিরই বেরিয়ে আসবে।  ভগিবালাপাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি আবু বক্কর বলেন, মসজিদের দোতলার চাবি মুয়াজ্জিনের কাছেই থাকে। শুধু শুক্রবার জুমার নামাজের জন্য দোতলার দরজা খুলে দেওয়া হয়। বন্ধ ঘরে কীভাবে লাশ গেল, কারা রাখল সেটা ভেবে পাচ্ছি না। সুত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন


আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!