ব্রেকিং

x

এক প্রেমিকের দুই প্রেমিকা।

ভালোবাসার দিনে একসাথে দুই প্রেমিকার আত্মহত্যা

বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | ৯:৩৪ অপরাহ্ণ

ভালোবাসার দিনে একসাথে দুই প্রেমিকার আত্মহত্যা

বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসার জন্য একই সাথে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে দুই কিশোরী। তারা সম্পর্কে আপন খালাত বোন। দুই কিশোরীই একটি ছেলেকে ভালোবাসত, সেটা নিয়ে বিরোধের জেরে একই সাথে তারা আত্মহননের পথ বেছে নেয় বলে গুঞ্জন উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর মহানগরীর শেখপাড়া এলাকায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। একই পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে তাদের।


এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে প্রকাশ, রংপুর মহানগরীর ৩১ নং ওয়ার্ডের শেখপাড়ার আলমগীর হোসেনের মেয়ে স্থানীয় দর্শনা বাছিরন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী সাদিয়া জান্নাত অর্ণি (১৫) একই এলাকার আনছার আলীর ছেলে মডেল কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মেরাজুল ইসলাম নামের এক ছেলেকে ভালোবাসত। ওই ছেলের সাথে অর্নির খালাত বোন একই এলাকার মঞ্জুর হোসেন লিটনের মেয়ে স্থানীয় নাজিরদিগর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী লুৎফর নাহার লতারও (১৪) ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি দু’জনই অবহিত হয়ে এ নিয়ে উভয়ের মধ্যেই কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি পরিবারের লোকজনও জানতে পারে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে লতার ভাই সাবিবর ও শাকিলসহ কয়েকজন মিলে সোমবার দুপুরে মেরাজুল ইসলামকে মারপিট ও শাসন করে। ভয়ে মেরাজুল এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।


মঙ্গলবার ফাগুনের প্রথম দিনে সকালে লতা ও অর্নি পাশেই নানা মৃত সাবেক মেম্বার ফখরুল ইসলামের বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে তারা দু’জন ওই ছেলেকে উদ্দেশ করে দুটি চিঠি লিখে মেরাজুলের বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে মেরাজুলের মাকে দেয়। মেরাজুলের মা চিঠিটি পুড়ে ফেলেন। পরে দুপুরে তারা একসাথে বাড়ির সকলের অগোচরে নানার বাড়িতে থাকে কীটনাশক পান করে। পরিবারের লোকজন তাদেরকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে অর্নি এবং ভোর ৫টায় লতা মারা যায়। এ ঘটনায় ওই এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে। প্রেমিক মেরাজুল ইসলাম এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

এদিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে সাংবাদিকদের কাছে মেরাজুলের মা প্রথমে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে চিঠির বিষয়টি স্বীকার করলেও তিনি জানান, ফাঁকা কাগজ ছিল আমি পুড়িয়ে ফেলেছি।

এদিকে স্থানীয় দর্শনা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ভুট্টু জানান, দুই বোনের মধ্যে যেন কী বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। সে কারণেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। প্রেম বিষয়ে ঝগড়া কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টিকে মেরাজুলের সাথে প্রেম সম্পর্কিত বিষয় বলে রটানো হচ্ছে। তেমনটি হলে স্থানীয় মানুষ এতক্ষণ মেরাজুলের বাড়িঘর তছনছ করত।

স্থানীয় কাউন্সিলর শামসুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। লাশ পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সাথে কথা হয়েছে। আত্মহননের কারণ জানার চেষ্টা চলছে।

কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ বাবুল মিঞা জানান, দুই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পৃথক দুটি ইউডি মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ইউডি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই ওয়ালিউর রহমান, ময়না তদন্ত শেষে দুটি লাশই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কোন পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ করা হয়নি। ভালোবাসার কারণে এই আত্মহনন কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দু’জনই ছোট। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।

সুত্র: নয়াদিগন্ত

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!