ব্রেকিং

x

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির ১৪ কমিটি ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত হয়নি, আহবায়কের একক কর্তৃত্বের অভিযোগ

রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ | ৯:৩৯ অপরাহ্ণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির ১৪ কমিটি ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত হয়নি, আহবায়কের একক কর্তৃত্বের অভিযোগ

বিশ্বজিৎ পাল বাবু:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি’র অধীনস্থ সকল উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র সকল কমিটি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত কোনো সভাতে হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র। ওই সূত্রটি অভিযোগ করেছে, নয় উপজেলা ও পাঁচ পৌরসভার কমিটি ভাঙ্গা হয়েছে জেলা কমিটির আহবায়কের একক কর্তৃত্বে। মূলত ৩০ নভেম্বরের সভায় সাংগঠনিক টিম করে এর রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই ইউনিটগুলোতে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।


জেলা বিএনপি’র আহবায়ক মো. জিল্লুর রহমানের ২৪ ডিসেম্বর স্বাক্ষর করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা বিএনপি’র অধীনস্থ সকল উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র সকল কমিটি বিলুপ্ত করার কথা জানানো হয়। ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তি সরবরাহ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ৩০ নভেম্বরের সভার সিদ্ধান্তের আলোকে কমিটিগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিলুপ্ত ইউনিটগুলো পরিচালনার জন্য শিগগির উপজেলার ও পৌরসভার সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।


১৪ নভেম্বর জেলা বিএনপি’র নতুন কমিটি গঠন হওয়ার মাত্র দেড় মাসের মাথায় উপজেলা ও পৌরসভার সব কয়টি কমিটি বিলুপ্ত করার কথা জানানো হলো। ওই সময়ের মধ্যে বিএনপি’র অংগসংগঠন যুবদল ও ছাত্রদলের একাধিক নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। জেলায় কসবায় এ নিয়ে বিএনপি ও অংগসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এখন একসঙ্গে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা করায় দলের মধ্যে তীব্র সমালোচনা করা শুরু হয়েছে। বিএনপি’র কেন্দ্রীয়ভাবে সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রম ঘোষণা করা হলে ওইসব এলাকায় কে দায়িত্ব নিয়ে পালন করবে এ নিয়েও আছে আলোচনা। ৩০ নভেম্বর সভায় সিদ্ধান্ত হলে ২৪ ডিসেম্বর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করা ও পরদিন সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো নিয়েও নেতা-কর্মীদের অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। কোনো কমিটি গঠন না করেই একসঙ্গে নয়টি উপজেলা ও পাঁচটি পৌরসভার ইউনিট একসঙ্গে বিলুপ্ত করায় দলটি এখন সাংগঠনিকভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেন।

বিলুপ্ত ঘোষিত নাসিরনগর উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘সাংগঠনিক নিয়ম অনুসারে একটা কমিটি বিলুপ্ত করলে অন্তত একটা আহবায়ক কমিটি করে দেয়া উচিত ছিলো। এখন শুনেছি আহবায়ক কমিটি সাংগঠনিক সফর করে নতুন কমিটি গঠন করবে।’
বিলুপ্ত ঘোষিত আখাউড়া উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক আবুল মুনসুর মিশন বলেন, ‘যে সভার কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেটাতে এ ধরণের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জেলার অনেকেই বলেছেন। আহবায়ক কমিটির গঠন বিষয়ে অনেকে আমাদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। এরই মধ্যে কমিটি বিলুপ্ত করার প্রেস বিজ্ঞপ্তির কথা জানতে পেরেছি।’

৩০ নভেম্বরের সভায় উপস্থিত জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান সদস্য এ বি এম মমিনুল হক শনিবার বিকেলে বলেন, ‘৩০ নভেম্বরের সভায় সাংগঠনিক টিম করে দেয়া হয় উপজেলা ও পৌরসভার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন কমিটি বিষয়ে মতামত দেয়ার জন্য। কমিটি ভাঙ্গার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয় নি। কিভাবে এ ধরণের প্রেস বিজ্ঞপ্তি আহবায়ক দিয়েছেন সেটা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।’

জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান সদস্য মো. জহিরুল হক খোকন একই কথা বলেন। তিনি জানান, সভার সিদ্ধান্ত ছাড়া আহবায়ক একক কর্তৃত্বেই কমিটি ভেঙ্গেছেন। কিভাবে সেটা করেছেন ওনিই ভালো বলতে পারবেন।
তবে প্রেস বিজ্ঞপ্তির পাঠানোর পর থেকেই সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন জেলা বিএনপি’র আহবায়ক মো. জিল্লুর রহমান। সন্ধ্যায় বেশ কয়েক সাংবাদিক ফোন করলেও পরিবারের লোকজন কল রিসিভ করে তিনি বিশ্রামে আছেন বলে জানান। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়  এই প্রতিবেদক ফোন করলে তাঁর মেয়ে পরিচয়দানকারি বলেন, ‘কাজের চাপের কারণে ওনি বিশ্রামে আছেন। অনেক ফোন আসছে যেগুলো আমরাই রিসিভ করছি।’ শনিবার বেলা সাড়ে চারটার দিকে কল করা হলেও তাঁর আরেক মেয়ে ফোন রিসিভ করে একই কথা জানান।

তবে দুপুরের দিকে দলের একাধিক নেতা ও সাংবাদিককে তিনি বলেন, ‘৩০ নভেম্বরের সভায় কমিটি ভাঙ্গার বিষয়ে আমাকে একক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সংগঠনকে গতিশীল করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিলুপ্ত ঘোষিত কমিটি গঠন করা হবে।

 

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!