ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে একটি বিশ্বমানের শিক্ষা নগরী হিসাবে গড়ে তুলা সম্ভব বলে দাবী করেছেন বিএনপি নেতা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যবসায়ি আলগাজ্ব কবির আহমেদ ভুইয়া। তিনি বলেন, ভৌগোলিক ও অবকাঠামোগত সুবিধা, জেলার ঐতিহ্য ও স্থানীয় জনগণের আগ্রহের সমন্বয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নতুন দিগন্ত উম্মোচনের সম্ভবনা রয়েছে। উপযোগী পরিকল্পনা ও সমন্বিত প্রচেষ্টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে উঠতে পারে দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা নগরী বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঐতিহাসিকভাবে শিক্ষানুরাগী ও সংস্কৃতিমনস্ক অঞ্চলের পরিচয় বহন করে আসছে। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, নবীন চন্দ্র সেন, সত্যেন সেনের মতো বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের জন্মভূমি এই জেলা। এখানকার মানুষের মধ্যে শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রতি স্বাভাবিক টান রয়েছে, যা একটি টেকসই শিক্ষা নগরী গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।
তিনি আরো জানান, রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের নিকটবর্তী হওয়ার পাশাপাশি ত্রিপুরা সীমান্তঘেঁষা অবস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজলভ্য করে তুলেছে। জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর এবং মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরের আগরতলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যসহ ভুটান ও নেপালের শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা সম্ভব। ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়ক ও রেলপথের উন্নত যোগাযোগও শিক্ষা নগরী গড়ার প্রকল্পকে সহায়তা করবে।
আলহাজ্ব কবির আহমেদ ভুইয়া দাবী করেন, জেলার ঐতিহ্যবাহী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ, সাবেরা সুবহান হাই স্কুল, অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, টাউন হল লাইব্রেরি ইতোমধ্যে শিক্ষার ভিত্তি তৈরি করেছে। বর্তমান অবকাঠামোর ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক মানের কিন্ডারগার্টেন স্কুল (দার্জিলিং মডেল), স্পোর্টস স্কুল (বিকেএসপি মডেল), কারিগরি ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ ও গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা যেতে পারে। পাশাপাশি বিশ্বমানের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে স্থাপন করা সম্ভব।
তিনি আরো জানান প্রতিবছর জেলার অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকা বা বিদেশমুখী হন। যদি ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই উচ্চমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যায়, তাহলে মেধা পাচার রোধ হবে এবং স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
তিনি জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিস্তীর্ণ খালি জমি, সবুজ প্রকৃতি ও নদী-বিলঘেরা পরিবেশ একটি পরিকল্পিত, সবুজ ও পরিবেশবান্ধব শিক্ষা নগরী গড়ে তুলতে সহায়ক হতে পারে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি নেতা ব্যবসায়ী আলহাজ্ব কবির আহমেদ ভূঁইয়া মনে করেন, “বিদেশি ও দেশি বিনিয়োগকারী, শিক্ষাবিদ এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে একটি বিশ্বমানের শিক্ষা নগরী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। প্রথমে খ্যাতনামা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা প্রতিষ্ঠা করে, পরে সম্পূর্ণ নতুন উচ্চশিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।”
তিনি জানান, “চল্লিশ লক্ষ মানুষের ঐক্য ও জনসচেতনতার মাধ্যমে যদি এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হবে বাংলাদেশের শিক্ষা উন্নয়নের নতুন মডেল। এখান থেকেই জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষা বিপ্লবের যাত্রা শুরু করা যেতে পারে।”
তিনি আরো জানান, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শাখা স্থাপন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে শিক্ষা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি অপরিহার্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেবল অতীতের গৌরবের বাহক নয়, ভবিষ্যতের সম্ভাবনার এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা। এখন সময় এসেছে পরিকল্পিত উদ্যোগ, সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা নগরী হিসেবে গড়ে তোলার।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com