ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক পড়েছে। এই উপজেলায় গত ৯ মাসে ৫২টি ট্রান্সফরমার চুরি হচ্ছে বলে জানা যায় ,যার বাজার মূল্য ৩২ লক্ষ ৩১হাজার টাকা,ট্রান্সফরমার না থাকায় উপজেলার তিন সহস্রাধিক পরিবার রয়েছে অন্ধকারে । চুরি হওয়া স্থানে নতুন করে ট্রান্সফরমার স্থাপন করতে গ্রাহকদের টাকায় ট্রান্সফরমার কিনতে হচ্ছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ থাকাকালে ও লোডশেডিংয়ের সময় ট্রান্সফরমার চুরি হচ্ছে, যা কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। সাধারণ মানুষের ধারণা এর সঙ্গে বিদ্যুতের টেকনিশিয়ান জড়িত থাকতে পারে।

এ বিষয়ে নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জিএম প্রকৌশলী মোঃ আমজাদ হোসন জানায়, বর্তমানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৭টি স্থানে ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ার পরও নতুন করে আর স্থাপন করা হয়নি। এতে অন্তত তিন হাজার শিক্ষার্থীসহ ব্যবসায়ীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। চুরি হওয়া স্থানে প্রথমবার অর্ধেক ও দ্বিতীয়বার সম্পূর্ণ টাকা গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরো তৎপর হওয়ার দরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে নাসিরনগর থানার ওসি মোঃ আব্দুল কাদের জানায়,পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়ে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রান্সফরমার চুরি ঠেকাতে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে চোর চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আন্দ্রাবহ আদর্শ গুচ্ছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রার্থ দাস জানায়, আগস্ট মাসে ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। আজ পর্যন্ত ট্রান্সফরমার লাগানো সম্ভব হচ্ছ না। নাসিরনগর নুরিয়া গাউছিয়া ট্রেডার্সের ব্যবসায়ী মোঃ রমজান মিয়া বলেন, ৩০ অক্টোবরে রাত্রে আমার ৩ টি ট্রান্সফরমার চুরির হয়েছ।

অধিকাংশ গ্রাহক জানায়, কিছুদিন পরপরই একের পর এক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেই চলছে। কিন্তুু প্রতিরোধে বা চুরি ঠেকাতে পল্লী বিদ্যুতের যেন কোনো মাথাব্যথা নেই। ট্রান্সফরমার চুরি ঠেকাতে বিভিন্ন প্রন্থা অবলম্বন করেও কোনো লাভ হচ্ছে না।

সরেজমিন বিদ্যুৎ গ্রাহক সাহেদ মিয়ার সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ৫০ হাজার টাকা দিয়ে নতুন করে ট্রান্সফরমার কিনে স্থাপন করতে হচ্ছে। এতে প্রায় এক সপ্তাহ অন্ধকারে থাকতে হয়েছে সবাইকে।

তারা আরও অভিযোগ করে অসহনীয় বিদ্যুতের লোডশেডিং সময়েই ট্রান্সফরমার গুলি চুরি হচ্ছে এতে করে গ্রাহকরা রয়েছে চরম ভোগান্তিতে। চরম ভোগান্তিতে থাকলেও নতুন করে ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হচ্ছে না। গ্রাহকদের টাকা দিয়ে নতুন করে ট্রান্সফরমার কিনতে হবে বলে জানান পল্লী বিদ্যুতের কর্তৃকপক্ষ।এতে করে গ্রাহকরা অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।