ব্রেকিং

x

আখাউড়া পৌর নির্বাচনে হ্যাট্রিক জয়ে থামতে চান বর্তমান মেয়র

মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২১ | ৭:৪৯ অপরাহ্ণ

আখাউড়া পৌর নির্বাচনে হ্যাট্রিক জয়ে থামতে চান বর্তমান মেয়র

বিশ্বজিৎ পাল বাবু:
আখাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে আ. লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল আগামীতে আর পৌরসভার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার বিকেলে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পূর্বে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি একথা জানান।


মেয়র তাঁর বক্তব্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বরাত দিয়ে বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় আমাকে বলেছেন পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো আমাকে নৌকা দেওয়া হলো। আগামীতে আমি নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পাব না। যে কারণে আমি সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই আগামীতে মেয়র পদে আর নির্বাচন করব না।’ নৌকার বিরুদ্ধে যেসব প্রার্থী মাঠে থাকবেন তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার জন্যও আহবান জানান।


উল্লেখ্য, একবার উপ-নির্বাচনে ও আরেকবার ‘পূর্ণাঙ্গ’ নির্বাচনে মেয়র পদে জয়লাভ করেন উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মো. তাকজিল খলিফা কাজল। আইনমন্ত্রীর আস্থাভাজন হিসেবে তিনি পরিচিত। তিনি মন্ত্রীর হাত ধরে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে ও বেকারদের চাকরি দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করেন।

এদিকে তাকজিল খলিফা কাজলের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ থেকে আরো চার বিদ্রোহী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন শুধুমাত্র দল মনোনীত প্রার্থী মো. জয়নাল আবেদীন আব্দু।

রবিবার সর্বশেষ সময় নাগাদ মেয়রসহ তিনপদে মোট ৫৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১০ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪১ জন। ১৯ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহার ২৬ জানুয়ারি, ২৭ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ইভিএম পদ্ধতিতে আখাউড়া পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগের তৃণমূলের ভোটেও অংশ নিয়ে দলীয় প্রার্থীকে মানার অঙ্গীকার করেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক মেয়র মো. নূরুল হক ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া, সদস্য মোবারক হোসেন রতন ও যুবলীগ কর্মী মো. শফিকুল ইসলাম। রবিবার জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মো. জিল্লুর রহমান উপস্থিত থেকে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন।

মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তাকজিল খলিফা কাজল সড়ক বাজারের বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক মুক্ত মঞ্চে বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার জন্য দলের সকল নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান।

এদিকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মো. নূরুল হক ভূঁইয়ার পক্ষে তাঁর ছেলে চলচ্চিত্র নায়ক রোশান (জিয়াউল হক ভূঁইয়া পরান) মাঠে নামলে প্রচারণায় আলাদা মাত্রা পায়। তবে পৌর এলাকার টানপাড়ায় মঙ্গলবার রাতে ছেলের সঙ্গে একটি নির্বাচন প্রচারণায় রাখা এক বক্তব্যে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন নুরুল হক ভূঁইয়া। বক্তব্যে তিনি একজন শীর্ষ জনপ্রতিনিধি ও বর্তমানকে মেয়রকে কটাক্ষ করে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন।

বুধবার রাতে সড়ক বাজার এলাকায় চায়ের দোকানে বসে থাকার সময় নুরুল হক ভূঁইয়া লাঞ্ছনার শিকার হন। থানায় করা সাধারণ ডায়েরিতে তিনি জুতাপেটার শিকার হওয়া ও তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে লাঞ্ছনাকারী সোহাগ মোল্লাকে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তাকজিল খলিফার সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করেন।

সোহাগ মোল্লা অবশ্য জানান, তাঁর বাবাকে গালমন্দ করায় এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। অবশ্য পরে নিজের বক্তব্যের জন্য নূরুল হক ভূঁইয়া দুঃখ প্রকাশ করেন। বিষয়টি তিনি স্লিপ অব টাং বলে উল্লেখ করেন। মনোনয়নপত্র জমাদানের পর ‘লাল চা’ খাওয়ার সময়ের মধ্যেই তিনি জন্ম নিবন্ধনের মতো একটি প্রক্রিয়া করে দিবেন ঘোষণা দিয়েও সমালোচিত হয়। বিদ্রোহী প্রার্থী মোবারক হোসেন রতন জানিয়েছেন জনগণ তাকে চাচ্ছেন বলেই দলের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করবেন। প্রচারাণা চালাতে গিয়ে তিনি জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলেও তিনি জানান।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!