ব্রেকিং

x

আখাউড়ায় স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রীর দাম লাগামহীন,করোনার ভয়ঙ্কর আঘাতেও থামছে না অপকর্ম

মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০ | ৮:৪২ অপরাহ্ণ

আখাউড়ায় স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রীর দাম লাগামহীন,করোনার ভয়ঙ্কর আঘাতেও থামছে না অপকর্ম
প্রতীকী ছবি

নুরুন্নবী ভুইয়া:
আখাউড়ায় মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই, হ্যান্ড স্প্রে, ফেস-শিল্ডসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রীর দাম এখন লাগামহীন। অধিকাংশ সুরক্ষা সামগ্রীর মান খারাপ হওয়ায় স্বাস্থ্যঝুকিও রয়েছে। করোনার দু:সময়কে পুজি করে কিছু লোভী মানুষ এইসব ব্যবসার নামে মানুষকে লুটপাট করছে। করোনার ভয়ঙ্কর আঘাতেও থামছেনা তাদের অপকর্ম।


খোজ নিয়ে জানাগেছে, বর্তমানে আখাউড়া উপজেলার ফার্মেসী বা অন্যান্য স্টোরে একেকটি সার্জিক্যাল মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। এ হিসাবে ৫০টি মাস্কের এক বক্সের দাম ১০০০-১২৫০ টাকা। আগে এসব মাস্ক খুচরায় এক পিস মাত্র ৫ টাকায় বিক্রি হতো। ৫০ পিসের এক বক্স মাস্কের পাইকারী মূল্য ছিল মাত্র ২০০ টাকা। একবার ব্যবহার যোগ্য সার্জিক্যাল মাস্ক আগে চিন থেকে আনা হতো। এখন দেশে কিছু কোম্পানী মাস্ক তৈরী করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।


আরও পড়ুন:আখাউড়ায় স্থলবন্দরে সীমিত পরিসরে আমদানি-রপ্তানি শুরু

জেলার একজন চিকিৎসক জানায়, আগে এন-৯৫ মাস্ক প্রতি পিস খুচরায় ১০০ টাকা ও পাইকারী ৮৫ টাকায় বিক্রি হতো। এসব মাস্ক আমেরিকা, চিন ও সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে আনা হতো। বর্তমানে এন-৯৫ মাস্কের চিত্রই বদলে গেছে। ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে একটি এন-৯৫ মাস্ক।

খুচরা বাজারে ১০০ পিস সাজ্যিকাল গ্লাভসের দাম ছিল আগে ৩০০ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ২ হাজার ৫০০ টাকা।

আখাউড়া সড়ক বাজারের এক দোকানদার জানায়, একটি প্লাষ্টিক হ্যান্ড স্প্রের মূল্য ছিল ৩০ টাকা, বর্তমানে ১০০ টাকায় বিক্রিয় হচ্ছে।  বিভিন্ন মুদিমালের দোকানে জুলিয়ে রেখে তা বিক্রিয় করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঔষধ বিক্রেতা জানায়, মাস্ক ও গ্লাভস বিক্রি ও এর মান নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদেরকে বাড়তি কোন অনুমতির প্রয়োজন হয়নি। যারা তাদেরকে মাল সরবরাহ করছে তারাই এগুলো মেইনটেইন করেন।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নমুনা বেশি নেয়া এলাকায় আক্রান্তও বেশি, সংগ্রহে গড়িমসির অভিযোগ

আখাউড়া সড়ক বাজারের কয়েকজন ঔষধ ব্যবসায়ি জানায়, মার্চ মাসে দেশের প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পরপরই ঔষধের দোকানগুলোতে হ্যান্ড-স্যানিটাইজার, মাস্ক, গ্লাভস কেনার হিড়িক পড়ে যায়। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলে ফেস-শিল্ড, পিপিই বিক্রি শুরু হয়।

খোজ নিয়ে জানা যায়, যেসব পিপিই, স্যানিটাইজার, ও ফ্রেস-শিল্ড বিক্রি হচ্ছে তার অধিকাংশই দেশের বিভিন্ন স্থানে তৈরী নিম্নমানের। মান নিয়ন্ত্রণে কোন তদারকীও নেই এই সব সামগ্রীতে।

মনিয়ন্দের রিয়াদ চৌধুরী, হীরাপুরের দ্বিন ইসলাম খানসহ কয়েকজন জানায়, আমরা পয়সা দিয়ে জিনিসটা কিনে মনে করছি ভালোটা কিনেছি। কিন্তু এটা নকল কিনা সেটা আমরা কিভাবে বুঝব?। যে পরবে সে মনে করবে যে সে নিরাপদ। এসব সামগ্রী মানুষের মধ্যে এক ধরণের নিরাপদ বোধ করার অনুভুতি তৈরী করে বলেই দেদারছে ক্রয় করছে।।

আরও পড়ুন: আখাউড়ায় মেয়রের হাতে ঝাড়ু, কেউ করলেন স্প্রে যুবলীগের চেষ্টায় বদলে গেলো হাসপাতাল

আখাউড়া পৌরসভার রাধানগর গ্রামের রুমেল(৩৫), সোহাগ মিয়া (৩৮), আনোয়ার হোসেন(৩২)সহ কয়েকজন জানায়, করোনার এই ভয়ঙ্কর সময়ে কিছু মুনাফাখোর করোনা সুরক্ষা সামগ্রীর অযৌক্তিক দাম বাড়িয়ে মানুষকে লুটপাট করছে।তাদের লোভের আগুনে দগ্ধ হচ্ছে আতঙ্কিত সাধারন মানুষ। সরকারী নিষেধাজ্ঞা বা মানবিক আহবানেও তাদের এই অপকর্ম বন্ধ হচ্ছে না। করোনাকালীন অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে নিজেদের আখের গোছাচ্ছে তারা।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার রেইনা জানান, শুধু স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নয়, সবধরণের মালামালের বিক্রির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দাম বা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

তিনি আরো বলেন, আখাউড়ায় নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী বিক্রির ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পড়লে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানান।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!