আজ বুধবার দুপুর ২টা। আখাউড়া উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন চেকপোষ্ট সড়কে একটি পিকআপে কমপক্ষে ১৫ জন মানুষ। প্রত্যেকের নিকট মাস্ক থাকলেও মুখে নেই। কেউ হাতে নিয়ে বসে আছেন, আবার কেউ পকেটে মাস্ক রেখে দিয়েছেন।
সড়ক বাজারের গিয়ে দেখাগেছে ক্রেতা বিক্রেতা কারো মুখে মাস্ক নেই, কেউ হাতে আবার কেউ কেউ থুতনির নিচে মাস্ক নামিয়ে রেখে ক্রয়-বিক্রয় করছেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ১০৬ জনকে জরিমানা
নির্দিষ্ট শারীরিক দূরত্বও মানছে না তারা। খুব কাছ থেকে কথা বলছেন। গল্প করছেন। তাদের দেখে বিন্দুমাত্র বোঝার উপায় নেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিরোধে দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর জীবন ও জীবিকার তাগিদে গত রোববার সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়। যানবাহন চলাচলও শুরু হয়েছে।
এদিকে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সড়ক বাজার গিয়ে দেখাগেছে ,যান চলাচলে পুরনো চেহেরায় ফিরেছে সড়ক বাজার। ডাকঘর, মায়াবী সিনেমা হল, দু’তলা মসজিদ এলাকার রাস্তার যেখানে সেখানে ব্যাটারী ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, মোটরসাইকেল পার্কিং করা হয়েছে, রাস্তায় ভ্যানগাড়ি দাড় করিয়ে ফলের ব্যবসাসহ বিভিন্ন পণ্য ক্রয় বিক্রয় চলছে। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে সড়ক বাজারে কিন্তু কোন প্রতিকার নেই। অসচেতন ক্রেতাদের গণজমায়েতের কারণে সচেতন মানুষরা পায়ে হাটার রাস্তাও খুজে পাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছেলেকে দিনমজুর বানালেন চেয়ারম্যান, মেম্বার সাজলেন শ্রমিক
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার রেইনা, আখাউড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ রসুল আহমদ নিজামীসহ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের লোকজন প্রতিদিনই বলছেন, আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে। আপনি সুরক্ষিত থাকলে আপনার পরিবার সুরক্ষিত থাকবে । প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে আখাউড়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। তারা বারবার বাইরে বের হলে অবশ্যই মুখে মাস্ক পরিধান করার পাশাপাশি হাতের গ্লাভস সম্ভব হলে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) পরিধানে পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ঘন ঘন হাত ধোয়া এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করছেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা! অধিকাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে না।
গত কয়েকদিন আখাউড়া উপজেলা বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই, যাদের মাস্ক আছে তারা সঠিক নিয়ম মেনে নাকে মুখে মাস্ক না বেধে তা নামিয়ে থুতনির কাছে রাখছেন। সবজি বাজারের গিয়ে দেখাগেছে ব্যবসায়ি কারো মুখে মাস্ক নেই।
এছাড়া নাকে-মুখেও হাত দিচ্ছেন অনেকে। শারীরিক দূরত্ব বজায় না রেখে খুব কাছাকাছি বসে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
তবে এর উল্টো চিত্রও কিছু দেখা গেছে। হাতোগোনা কিছু মানুষ সঠিক নিয়ম মেনে মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস ব্যবহার করে রাস্তায় চলাফেরা করছেন।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় করোনা আক্রান্ত এলাকা লকডাউন, লোক চলাচলের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা
উপজেলা পরিষদের সামনে চেকপোষ্ট সড়কে পিকআপ ভ্যানভর্তি মানুষ হবিগঞ্জ আজমিরি গঞ্জ থেকে মাছের পোনা নিয়ে এসেছেন। করো মুখে মাস্ক নেই। আস্তে রাস্তায়ও কোন সমস্যা হয়নি। সবচেয়ে বয়স্ক ফরিদ মিয়া (৫৫)কে মাস্ক খুলে রাখার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাস্ক পরে থাকলে দম বন্ধ লাগে। তাই মাস্ক পড়তে ভালো লাগেনা।
সড়ক বাজার এলাকার এক রিকশাচালক বলেন, প্রচন্ড তাপদাহে এমনিতে রিক্সা চালাতে গিয়ে দম বন্ধ আসে, মাস্ক পরে থাকলে আরও বেশি খারাপ লাগে। তাই তিনি মাস্ক খুলে রাখেন।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com