ব্রেকিং

x

আখাউড়ায় দুমুঠো চালে তানিয়াকে বাঁচানোর চেষ্টা!

শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৯:৩৪ অপরাহ্ণ

আখাউড়ায় দুমুঠো চালে তানিয়াকে বাঁচানোর চেষ্টা!

বিশ্বজিৎ পাল বাবু:
নুন আনতে পান্তা ফুরোয় শরীফ মিয়ার। একই অবস্থা মহরম আলীর পরিবারেরও। শরীফ মিয়ার ঘর থেকে দেওয়া হলো এক কেজি চাল ও মহরম আলীর পরিবার থেকে দুই কেজি চাল। নিজেদের সামর্থের কথা বলে দুইহাত তুলে দোয়া করলেন তারা।


মহরম আলী ও শরীফ মিয়াদের এ দোয়া ও সহযোগিতা গ্রামের গৃহবধূ তানিয়ার জন্য। টিউমার থাকা তানিয়ার ডান পা কেটে ফেলা হয়েছে। ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি থেকে বাঁচতে তানিয়ার আরো চিকিৎসার দরকার। কিন্তু চিকিৎসার সেই আর্থিক সামর্থ নেই তানিয়ার পরিবারের।


এমন অবস্থায় সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছেন তানিয়ার শ্বশুরবাড়ির এলাকার লোকজন। যে যার মতো করছেন সাহায্য। একদল মানবিক মানুষ বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাহায্য তুলছেন। তাঁদের সেই ভালোবাসার হাতে তুলে দিচ্ছেন যে যা পারছেন চাল কিংবা নগদ অর্থ।

তানিয়া আক্তার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের হাওড়ার চর গ্রামের সবুজ মিয়ার স্ত্রী। পেশায় অটোরিকশাচালক সবুজ মিয়ার পক্ষে স্ত্রীর চিকিৎসার ব্যয়ভার কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছিল না বলে সেটি দিয়ে বর্তায় বড় বোন খাদিজা আক্তারের ওপর। ঢাকায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে খাদিজা আক্তারও অর্থের সংকুলান করতে পারছিলেন না। বাধ্য হয়েই হাসপাতাল থেকে বোনকে নিয়ে আসেন। এখন বাসা থেকে নিয়েও চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না টাকার অভাবে।

রাজেন্দ্রপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মো. রোকন উদ্দিন লিটন শনিবার বিকেলে বলেন, ‘গ্রামের ১০ জন মিলে ঘরে ঘরে যাচ্ছি। যে যা পারছেন আমাদেরকে দিচ্ছেন তানিয়ার সহযোগিতার জন্য। নোয়াব মিয়া নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত ড্রাইভারের কাছে গেলে তিনি ২৫০ টাকা দেন। এরপর একাধিক খেটে খাওয়া মানুষ চাল দিয়ে সহায়তা করেন। পার্শ্ববর্তী আদমপুর গ্রাম থেকে তিন হাজার টাকা ও প্রায় ২০ কেজি চাল উঠানো হয়। সকলের সহযোগিতায় আমরা গ্রামের গৃহবধূকে বাঁচাতে চাই।’

তানিয়ার অটোরিকশাচালক স্বামী সবুজ মিয়া বলেন, আমার পক্ষে চিকিৎসা করানো কোনোভাবেই সম্ভব ছিলো না। তার বোন ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এখন তিনিও কোনোভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকেও আর ধার-দেনা করা সম্ভব হচ্ছে না।

তানিয়ার বোনা খাদিজা জানান, ১৮ আগস্ট তানিয়াকে প্রথমে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয়ে ক্যান্সার হাসপাতালে। সেখানেও চিকিৎসা করতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। এক পর্যায়ে প্রাইভেট চেম্বারে ডাক্তার দেখিয়ে আহসান ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

তিনি বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতেই প্রয়োজন হয় প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা। অপারেশন শেষে প্রায় ৮০ হাজার টাকা বিল আসে। বিল দিতে না পারায় রোগীকে তিন-চারদিন বেশি রাখতে হয় হাসপাতালে। এক পর্যায়ে আত্মীয় স্বজন ও স্বামীর কর্মস্থলের মালিকের কাছ থেকে ধার নিয়ে বিল পরিশোধ করে বোনকে বাসায় নিয়ে আসি। এখন বাসা থেকে নিয়ে প্রতিদিন চিকিৎসা করাতেও যে টাকার প্রয়োজন সেটিও হাতে নেই। আবার অপারেশনের জন্য যে টাকা প্রয়োজন সেটাও যে কোথাও পাবো বুঝতে পারছি না। আমি আমার বোনেক বাঁচাতে চাই।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!