করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আখাউড়ায় চলছে অঘোষিত লকডাউন। ঝুকি এড়াতে গৃহবন্দি থাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এই অবস্থায় অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। দরিদ্রদের ঘরে দেখা দিয়েছে খাবার সংকট।
এ অবস্থায় সমাজের ভিত্তিশালী, বিভিন্ন সংগঠন, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও জনপ্রতিনিধি দরিদ্রদের পাশে দাড়াতে দেখা যাচ্ছে তবে আখাউড়ায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণের চেয়ে আত্মপ্রচার বেশি হচ্ছে। ব্যক্তি প্রচারণাকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন অনেকেই। অসহায় মানুষের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের নামে ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে অনেকেই বিব্রত। বিষয়টি নিয়ে আরও সংযত হওয়ার আহবান জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
আখাউড়ায় দরিদ্র মানুষ যখন জীবিকা নির্বাহ নিয়ে চিন্তিত তখন একশ্রেণির মানুষ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের নামে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের ছবি তুলে ফেসবুকে আত্মপ্রচারে মগ্ন। বিষয়টি ভুক্তভোগী অনেকের জন্য লজ্জার। এজন্য ঘরে খাবার না থাকলেও মধ্যবিত্তরা খাবার নিতে আসছেন না।
সচেতন মহল বলছেন, করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রমে যারা অংশ নিচ্ছেন তারা কতটুকু সচেতন? তারা সচেতনতার সংজ্ঞা জানেন?। করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালনার সময় তাদের অবাধে জমায়েত হতে দেখা যায়। এর মধ্যে সেলফি ভাইরাসে আক্রান্ত একশ্রেণির দানশীলরা। অতি উৎসাহী হয়ে কেউ কেউ খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ফটোসেশনও করছেন।
কয়েকদিন ধরে দেখা গেছে, আখাউড়ায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একাধিক সংগঠন, বিত্তবান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ কয়েকটি সংস্থা ফেসবুকের মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের প্রচারণা চালাচ্ছে। কেউ কেউ খাদ্য সামগ্রী বিতরণকালে ফেসবুকে লাইভ করছেন। আবার কেউ কেউ খাদ্য সামগ্রী দিয়ে ছবি তুলছেন।
এমন বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতা জানায়, অসহায়দের দান করতে অন্যদের উৎসাহী করার জন্য ফেসবুক লাইভ ও ছবি পোস্ট করছেন তারা। তবে এতে ভুক্তভোগীদের সম্মানহানি হয় কি-না এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি তারা।
এসবের ব্যতিক্রমও লক্ষ্য করা গেছে। অনেক সংগঠন বা ব্যক্তি গোপনে খাদ্য বিতরণ করছেন। তারা বলেছেন, এ সময়ে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই খাদ্যসহায়তা নিতে নারাজ। অনেকেই উপায় না পেয়ে সহায়তা নেন। আমরা যদি খাদ্য সামগ্রীর ছবি তুলে প্রচার করি তাহলে তাদের অসম্মান করা হবে।
দানের বিষয়ে ইসলামে রয়েছে কঠোর নির্দেশনা এমনটি জানিয়েছেন আখাউড়া নারায়নপুর শের আলী শাহ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আহাম্মদ আলী আল সাবেরী।
তিনি বলেন, আল্লাহর রাস্তায় দান করা একটি মহৎকাজ। মানুষের কল্যাণে দান করা আল্লাহর রাস্তায় দান হিসেবে গণ্য হয়। দরিদ্র মানুষের উপকারে যে দান করা হয় তা অতুলনীয়। তবে দানের মূল উদ্দেশ্য থাকতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। মানুষকে দেখানো বা আত্মপ্রচারের জন্য কোনো দানের মূল্য নেই আল্লাহর কাছে। গোপনে দান করা উত্তম।
তিনি বলেন, বর্তমানে বেশিরভাগ দানেই দেখা যাচ্ছে আত্মপ্রচারই মূল উদ্দেশ্য। তবে যে দান লোক দেখানোর জন্য কিংবা মানুষের প্রশংসা কুড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়, তা সৎ দান নয়। আল্লাহর কাছে এসব দানের কোনো মূল্য নেই।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com