আখাউড়ায় কয়েকজন ছাত্রলীগের তরুণ দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে পাড়া-মহল্লায়। করোনার মত ভয়ঙ্কর মহামারীর সময় অন্য দশজনের মত ঘরে বসে থাকেনি তারা। কী রাত কী দিন ছুটে চলেছে তারা। করোনার ভয়কে জয় করে দুর্বার-দুরন্ত তারা। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে অসহায় মানুষের কল পেলেই দ্রুত ছুটে যাওয়া। খাদ্য সামগ্রী বাড়িতে পৌছে দেয়া থেকে শুরু করে কৃষকের ধান কেটে সহায়তা করা, বাজারে জীবানুনাশক ছিটানো, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে লিফলেট বিতরণ কিংবা ভিক্ষুকদের হাতে রোজার ইফতার তোলে দেয়া । হোক সেটা রাত, তাতে কী? তারা যে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসাবে কাজ করছে।

আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু, সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন, সহ সভাপতি শেখ আশিকুর রহমান নাইম, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদি হাসান মাহী করোনায় আখাউড়াতে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসাবে দরিদ্রদের সহায়তায় এগিয়ে এসে এভাবেই মানুষের মন জয় করছেন বলে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।

জানাগেছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষরা যখন কর্মহীন হয়ে পড়ে তখনই আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপির নির্দেশে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপুল, সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন, সহ-সভাপতি শেখ আশিকুর রহমান নাইম, সংগঠনিক সম্পাদক মেহেদি হাসান মাহী এই সব দরিদ্র মানুষের পাশে দাড়ায়।

আরো জানা যায়, লকডাউন ঘোষণার পর তারা সবাই মাঠে নেমে পড়েন। শুরু থেকে কর্মহীন ও শ্রমজীবী মানুষের ঘরে খাদ্য সহায়তা দেয়া শুরু করেন। খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি উপজেলা ছাত্রলীগের এই নেতৃবৃন্দরাসহ উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দরিদ্র কিছু কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌছে দেন। সহ-সভাপতি শেখ আশিকুর রহমান নাইম শিশুদের দুধসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী নিয়ে দরিদ্র পরিবারে ছুটে যান। সংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মাহী একদম লোকচক্ষুর আড়ালে মধ্যবিত্তদের খাদ্য সহায়তা করেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগম শাপলু ও সাধারন সম্পাদত সাখাওয়াত হোসেন নয়ন স্বল্প আয়ের মানুষদের খোজে বের করে তাদের খাদ্য সহায়তাসহ নানা সহায়তায় এগিয়ে যান। করোনার জীবানুমুক্ত করতে বিভিন্ন স্থানে তারা ছাত্রলীগকে নিয়ে জিবানুনাশক ছিটিয়ে দেন জনবহুল এলাকায়। করোনায় সাবধানতা অবলম্বন করতে তারা ছাত্রলীগের সকলকে নিয়ে লিফলেট বিতরণ করেন। বর্তমানেও এই সহায়তা অব্যহত রয়েছে। রোজায় স্টেশন ও বাজারের ভাসমান ভিক্ষুকদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন তারা। ‘ভালোবাসার উপহার’ হিসাবে তারা অন্তত ২০০ ছিন্নমুল ভাসমান ভিক্ষুকের হাতে ইফতার তোলে দেন। করোনায় সাধ্যমত স্বল্প আয়ের মানুষদের সহায়তায় তারা নিয়মিত কাজ করে যাবেন বলেও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু জানিয়েছেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন জানায়, ফোন কল পেয়ে গোপনে মধ্যবিত্ত অনেক ঘরে খাবার পৌছে দিয়েছি আমরা। প্রতিটি পরিবারের মধ্যে চাল, ডাল, তেল ও আলু দেয়া হয়।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আখাউড়া পৌরসভার কিছু মধ্যবিত্ত পরিবার জানায়, ঘরে খাবার নেই, লজ্জায় কিছু বলতেও পারছিলাম না, ঠিক্ এমন সময় বাধ্য হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিকে কল দেয়ার পর গোপনে খাদ্য সামগ্রী দিয়েছে তাদের হাতে। উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন ও সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান নাইমের ক্ষেত্রেও এমন অনেক ঘটনা রয়েছে। রাধানগর গ্রামের অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারে গোপনে খাবার দিয়েছেন সংগঠনিক সম্পাদক মেহেদি হাসান মাহী।

করোনার এই কঠিন মুহূর্তে তাদের এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে মানুষ ভালো চোখেই দেখছে। বিশিষ্ঠজনেরা স্বাগত জানিয়েছে। ছাত্রলীগ নেতাদের এই উদ্যোগ সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছে বলেও জানাগেছে।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু জানায়, আইনমন্ত্রীর নির্দেশে সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন, সহ-সভাপতি শেখ আশিকুর রহমান নাইম, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদি হাসান মাহীর পাশাপাশি অন্যান্য ছাত্রলীগ নেতারাও স্বল্প আয়ের কর্মহীন মানুষের পাশে রয়েছেন। যতদিন করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হবে এবং সামর্থ যতদিন থাকবে; ততদিন ছাত্রলীগের এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে বলেও তিনি জানান। একই কথা বলেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন, সহ-সভাপতি শেখ আশিকুর রহমান নাইম, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদি হাসান মাহী।