ব্রেকিং

x

আখাউড়ায় অসাধু চক্রের হাতে শতাধিক একর ফসলি জমি বিলুপ্তির পথে, প্রতিকার নেই

বুধবার, ১৩ মে ২০২০ | ৯:৩১ অপরাহ্ণ

আখাউড়ায় অসাধু চক্রের হাতে শতাধিক একর ফসলি জমি বিলুপ্তির পথে, প্রতিকার নেই

আখাউড়ায় করোনার মত বৈশ্বিক মহামারিতেও থেমে নেই ভুমি অপরাধীরা। আইন অমান্য করে দেদারছে ফসলি জমির শ্রেণী পরির্বতন করছে একটি অসাধু চক্র। শতাধিক একর ফসলি ভুমি বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার মোগড়া, মনিয়ন্ধ ও ধরখার ইউনিয়নসহ বিভিন্ন স্থানের ফসলি জমির বুক চিরে খনন করা হচ্ছে বিশাল জলাশয়। জলাবদ্ধতা ও পানি নিষ্কাশন বন্ধের আশঙ্কায় বিভিন্ন স্থানে হুমকি মুখে পড়েছে অনেক ফসলি জমি। আতঙ্কে দিন কাটছে অসহায় কৃষকদের। সরেজমিন খোজ নেয়ার সময় এই তথ্য জানাগেছে।


খোজ নেয়ার সময় দেখাগেছে, অবৈধ ডেজার দিয়ে আখাউড়া মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন গ্রামের ফসলি মাঠ, মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মনিয়ন্দ গ্রামের বর্ধণ বাড়ির রাস্তার দুইপাশের ফসলি মাঠ এবং ধরখার ইউনিয়নের চান্দপুর ও ছতুরাশরীফ গ্রামের দক্ষিণ পার্শ্বের ফসলি মাঠ এবং ঘোলখার গ্রামের ফসলি মাঠের জমি খনন করে গড়ে তুলা হচ্ছে বিশাল জলাশয় (পুকুর)।প্রশাসনের চাপে অনেক সময় এই অসাধু চক্রটি দিনে কাজ বন্ধ রাখলেও রাতে পুরোদমে নির্ভয়ে ভুমি খননের কাজ করছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।


খোজ নেয়ার সময় স্থানীয়রা আরো জানায়, মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন গ্রামের বাগানবাড়ির ফসলি জমির বুক চিরে পুকুর খনন করছে ইউনুছ মিয়া, তুতা মিয়া। বেশ কয়েক বছর আগেও ইউনুছ মিয়ার পরিবার ফসলি জমি খনন করে বিশাল পুকুর তৈরী করেন এখানে। স্থানীয়রা জানায়, এই পুকুরগুলো খনন সম্পন্ন হলে হাওড়ানদীতে পানি নিষ্কাষণ বন্ধ হয়ে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হবে।

এদিকে খোজ নেয়ার সময় দেখাগেছে, আখাউড়া ধরখার ইউনিয়নের ঘোলখার গ্রামের ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে বিশাল জলাশয়। স্থানীয় মিন্টু ভুইয়া নামে এক ব্যক্তি এই অপকর্ম করেছে। এতে ফসলের মাঠে যাওয়ার পথ চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা প্রশাসনকে জানালেও রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্টরা নিরব ভুমিকা পালন করায় বীরদর্পে মিন্টু ভুইয়া ফসলি ভুমি খনন করে বিশাল জলাশয় তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে।

ঠিক একই ভাবে মনিয়ন্দ গ্রামের বর্ধণবাড়ি রাস্তার দুইপাশে নিদু মেম্বার ফসলি ভুমির বুক চিরে গড়ে তুলছে বিশাল জলাশয়।এতে রাস্তার ক্ষয়ক্ষতিসহ নানা প্রতিবন্ধিকতার মুখে পড়েছে কৃষকরা।

অপরদিকে ধরখার ইউনিয়নের ছতুরাশরীফ গ্রামের দক্ষিণ মাঠে ১৩ একর ফসলি ভুমি খনন করে জলাশয় তৈরী করছে স্থানীয় মুখলেছ মিয়া নামক এক প্রভাবশালী। এতে স্থানীয়রা পড়েছে বিপাকে, খননের নামে এখানে সরকারী খাল ভরাটসহ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে নিরীহ কৃষকরা। স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষি কর্মকর্তা বলেছেন, এবার করোনাভাইরাসের কারণে কৃষিকে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। করোনার কারণে যেন খাদ্য সংকট না হয়, সে জন্য সরকার সেচ রেট ৫০ শতাংশ হ্রাস করেছে। ধান উৎপাদনে লক্ষমাত্রাও বাড়িয়েছে। এই অবস্থায় যদি ফসলি জমি বিলুপ্ত করা হয় তাহলে বিষয়টি খুবই দু:খজনক বলে তিনি দাবী করেন।

আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি নাজমুল হাসান জানান, ফসলি ভুমির শ্রেণী পরিবর্তন করা সম্পূর্ণ অবৈধ। যারা ফসলি জমির শ্রেণী পরিবর্তন করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!