ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া বনগজ গ্রামের দুই পাশে দুইটি ব্রিজ দৃশ্যমান থাকলেও বিশাল একটি সরকারী খাল গায়েব হয়ে গেছে। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী হাসিনার আমলে এই খাল দখল করে বাড়িঘর নির্মান করে নিয়েছে। এতে গ্রামবাসী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। কৃষি কাজেও বিঘ্ন ঘটছে।
সম্প্রতি সরেজমিন বনগজ গ্রামে গিয়ে দেখাগেছে, গ্রামের রমজান খা ও কাজল কাজল মিয়ার বাড়ির ভিতরে দৃশ্যমান দুইটি ব্রিজ দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু গ্রামের ঐতিহ্যবাহী এই খালটি নেই। কাজল মিয়া, রমজান খাসহ খালের পাড়ের লোকজন মাটি দিয়ে খাল ভরাট করে বাড়িঘর নির্মান করে বসবাস করছেন। ব্রিজের সংযোগ সড়কও বেদখল হয়ে গেছে। একটি ব্রিজ সরকার ২০১৪ সালে খালের উপর নির্মান করে কিন্তু আরেকটি কখন নির্মান হয়েছে নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেনি।

গ্রামবাসী জানায়, গ্রামের দক্ষিণ দিকে হাওড় এলাকা থেকে শুরু হয়ে গ্রামের ভিতর দিয়ে গিয়ে উত্তর দিকে তিতাসনদীতে এই খালটির সংযোগ ছিল। খালের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় দেড় কিলোমিটার।
গ্রামের নাসিমা বেগম (৫৫), চারু মিয়া (৭০) জানায়, এক যুগ আগেও এই খালে নৌকা চলাচল করেছে। বর্ষা মৌসুমে গ্রামের লোকজন জাল দিয়ে মাছ ধরেছে এই খালে। এলাকার বৃষ্টির পানি এই খাল দিয়ে সরে যেত তিতাসনদীতে কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের প্রকাশ্য সহযোগীতায় এই খাল দখলের মহোৎসব শুরু হয়। এক পর্যায়ে অদৃশ্য হয়ে যায় খালটি।
রৌশন আলী (৫২) রহুল আমিন (৫৮) জানায়, বর্তমানে খাল না থাকায় গ্রামবাসী চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের জায়গাটি তলিয়ে যায়। এতে গ্রামবাসী ও স্কুল শিক্ষার্থীরা পথ চলাচল করতে পারে না।
খালটি দখলমুক্ত করে পুনরায় চালু করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে গ্রামবাসী বলেছে, আগে খালের পানি দিয়ে বাড়ির আশপাশের জমিতে সবজি চাষ করা যেত। হাঁস পালন করা যেত। গ্রামের পরিবেশের উপরও প্রভাব পড়েছে এই খাল না থাকায়।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি এম রাসেদুল ইসলাম জানান, এলাকায় সার্ভে টিম পাঠানো হয়েছে। সরকারী জমি দখলের প্রমান পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। গ্রামবাসীর উন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে বলেও তিনি জানান।