দেশের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই প্রথম গৃহনির্যাতন আইন প্রণয়ন করছে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নির্যাতন বন্ধে নীতিমালা করা হয়েছে। আমরা মনে করি, শিশুরা হচ্ছে দেশের ভবিষ্যত। সে ক্ষেত্রে তারা ঠিকভাবে গড়ে উঠুক এটা আমাদের চিন্তা ভাবনার মধ্যে আছে।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জাতীয় পর্যায়ের শিশু সংগঠন ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্সের (এনসিটিএফ) অ্যাডভোকেসি ফোরাম চাইল্ড পার্লামেন্টের বার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, শিশু অপরাধ সম্পর্কিত মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এ মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সারাদেশের সরকারি প্রসিকিউটরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে শিশু রাজন হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি হত্যা মামলার বিচার অতিদ্রুত শেষ হয়েছে। আমরা মামলার দীর্ঘসূত্রিতা দূর করার চেষ্টা করছি।
বিচারকার্যে যাতে বিলম্ব না হয় সেজন্য কাজ করছি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিচার বিলম্বিত হওয়ায় শুধু যে বিচারপ্রার্থী জনগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তা নয়। বিচার বিলম্বত হওয়া মানে হচ্ছে বিচার বিভাগের ব্যর্থতা এবং বিচার বিভাগের ব্যর্থতার শেষে যেটা হয় তাহলো, বিচার বিভাগের উপর জনগণের আস্থা হারিয়ে ফেলা। সেটা যদি হয় তার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। এ ভয়াবহ পরিণতি হচ্ছে স্ট্রিট জাস্টিস।
মন্ত্রী বলেন, আমি নিশ্চয়ই স্ট্রিট জাস্টিসের পক্ষপাতী না। আমি আইন নিজের হাতে তুলে নিতে নিরুৎসাহিত করবো এবং কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। কিন্তু সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতা কমাতে হবে। আর বিচার বিভাগের প্রতি যাতে জনগণের আস্থা না কমে সেজন্যই আমাদের কাজ করা উচিত।
শিশু রাজন হত্যা মামলা, রাকিব হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি হত্যা মামলার দ্রুত বিচার করায় বর্তমানে শিশু নির্যাতন কমেছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, সরকার শিশু নির্যাতন কমানোর বিষয়ে সবসময় সচেষ্ট থাকবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, জাতিসংঘ কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশু আইন প্রণয়ন করেছিলেন। সেই শিশু আইনই আজকের শিশু আইনের ভিত্তি। যদিও আজ তা বিস্তার লাভ করেছে। শিশু আইন প্রণয়নের সময় শিশু আদালত নিয়ে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সেগুলো দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সংশোধিত শিশু আইন এখন জাতীয় সংসদে আছে এবং এটি যে কোনো দিন পাস হয়ে যেতে পারে।
মন্ত্রী আরো বলেন, মামলা জট নিরসনে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং শিগগিরই আর একটি সিস্টেম চালু করতে হবে, সেটি হচ্ছে ‘জাস্টিস অডিট’।
তিনি বলেন, এই জাস্টিস অডিট সিস্টেমে আমরা ঘরে বসেই মামলার ধরন ও অবস্থা সম্পর্কে জানতে এবং মামলার অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবো। জাস্টিস অডিট সিস্টেম চালু করলে আমাদের অনেক অগ্রগতি হবে।
মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক, যুগ্ম সচিব হাবিবুর রহমান প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com