ব্রেকিং

x

শিশুর যে চিঠি নাড়া দিবে পুলিশ বাহিনীকে

মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৮ | ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ

শিশুর যে চিঠি নাড়া দিবে পুলিশ বাহিনীকে
শিশুর চিঠি

 


received_1757046504339223


অধরা ও অথৈ দুই বোন। বয়সে শিশু। অধরা এ বছর এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছে। অথৈ পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে। পুলিশকে দেখলে ওরা ভয় পায় না। বরং সাহস বাড়ে। বিপদে পড়লে পুলিশ তাদেরকে সাহায্য করবে- এমনটাই ধারণা তাদের।
পুলিশ সুপারকে অন্যদের মতো স্যার নয়, চাচ্চু ডাকতে ইচ্ছে করে অধরা ও অথৈ এর। পুলিশ সুপারকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে দাওয়াত খাওয়ানোর ইচ্ছে তাদের। পুলিশ সুপারের বাসভবনের মতো একটি বাড়ি বানানোর ইচ্ছাও পোষণ করেছে তারা।
মনের এমন সব অনেক অব্যক্ত কথা জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানকে চিঠি লিখেছে দুই বোন সাওলিয়া তাহ্সীন অধরা ও সামিহা তাহ্সীন অথৈ। একই সঙ্গে বৃত্তি থেকে পাওনা ও জমানো টাকায় একটি উপহারও কিনে দিয়েছে তারা।
অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেয়ে মিজানুর রহমান সম্প্রতি পুলিশ হেডকোয়র্টারে বদলি হয়েছেন। তাঁর বিদায় সংবর্ধনা উপলক্ষে গত ১৪ এপ্রিল বিকেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ওই দুই বোন উপহার ও চিঠি তুলে দেন বিদায়ি পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের হাতে।
বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে মিজানুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে ব্যাপক প্রশংসা করা কুড়ান। এ নিয়ে  বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়।  একটি সংবাদের সূত্র ধরে ধরে ‘মেধার ভার বয়ে বেড়ানো’ এক দিনমজুরকে লাখ টাকার বেশি মূল্যের গাভী কিনে দেন ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া মিজানুর রহমান। হাবিবা নামে এক অনাথ মেয়ের বিয়ে দিয়ে তিনি সারাদেশেই প্রশংসিত হন।
দুই বোনের দেয়া চিঠি গতকাল সোমবার চিঠিটি সাংবাদিকদের হাতে এসে পৌঁছে। চিঠিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অথৈ এর হাতের লেখা। তবে বড় বোন ওই স্কুল থেকে এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নেয়া অধরার নামও আছে চিঠিতে।
তাদের মা নাজমুন নাহার জানান, দুই বোন মিলে যুক্তি করে ওই চিঠি লিখে। ওরা পুলিশ সুপারকে খুবই ভালোবাসতো। তবে চিঠির বিষয়টি তিনি আগে থেকে জানতেন না। ওস্তাদ দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে তিতাস আবৃত্তি সংগঠন আয়োজিত অনুষ্ঠানে চিঠিটি পুলিশ সুপারকে দেয়ার পর তিনি অবগত হন। তবে চিঠিতে কি লেখা আছে গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত তিনি জানতে পারেন নি।
অধরা ও অথৈ থাকেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মধ্যপাড়ার ভাওয়াল বাড়িতে। তাদের বাবা মো. সোহাগ ঢাকায় ব্যবসা করেন। অধরা ও অথৈ আবৃতি করার সুবাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন ও সেখানে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা হতো।
দুই বোনের দেয়া চিঠির শুরুতে লেখা হয়েছে, ‘সবাই স্যার বলে, কেন জানি আমাদের দুই বোনের আপনাকে স্যার বলতে ইচ্ছে করে না, খুব আপন লাগতো। মনে হয় কত আপন! তাই মন থেকে চাচ্চু ডাকতে ইচ্ছে করে। হয়তো সামনে ভয়ে ডাকতে পারবো না। তাই এখানেই ডেকে নিচ্ছি’।
চিঠিতে তারা আরো লিখেছে, ‘আগে পুলিশ দেখলে খুব ভয় লাগতো। মনে হতো ওনারা মানুষ না, ভয় দেখানোর লোক। কিন্তু অনেক জায়গাতে পুরস্কার নিতে গিয়ে, বাসভবনে আপনাকে দেখার পর, সবার মুখে মুখে আপনার ভালো কথা শুনার পর থেকে এখন আমাদের পুলিশকে দেখলে একটুও ভয় লাগেনা, বরং সাহস হয়। কারণ আপনি আমাদের খুব আপন মানুষ। মনে হয় আমরা যদি কখনো কোনো বিপদে পড়ি, তাহলে আপনাকে জানালে আমাদেরকে কেউ আর কিছু করতে পারবে না।’

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!