বেগম জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যাবার পর বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে দলীয় ভাঙন ঠেকানো, জোট টিকিয়ে রাখা এবং খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশগ্রহণ। দিন যতই গড়াচ্ছে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিএনপির ব্যর্থতা ততই স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। তাই অনেকেই বলতে শুরু করেছেন নির্বাচন ও আন্দোলন প্রশ্নেই বিভক্ত হচ্ছে বিএনপি ও জোট এবং খালেদা জিয়াকে ছাড়াই নির্বাচনে যাচ্ছে বিএনপির একপক্ষ।
মূলত বাস্তবতার খাতিরে শেখ হাসিনার অধীনে ও আইনগত কারণে বেগম জিয়াকে ছাড়াই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হলেও বিএনপির একটি পক্ষ যেকোন মূল্যে ২০১৪ সালের মতো ভুল না করে এবার অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। আরেকটি পক্ষ সেই পুরনো সুরেই গান গাইছেন এখনো। তারা শেখ হাসিনার অধীনে এবং খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রয়োজনে যারা বেগম জিয়াকে ছাড়া এবং শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে তাদের দলে অবাঞ্ছিত এমনকি বহিস্কারের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে বলে একটি গোপন সূত্র নিশ্চিত করেছে। জানা যায়, রিজভীর নেতৃত্বে এই গ্রুপটির প্রতি তারেক রহমানের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তাই নির্বাচনের আগেই বিএনপি বিভক্ত হবার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিতই বলা যায়।
অন্যদিকে, ভোটের মাঠে ২০ দলীয় জোট থাকবে না, তাও প্রায় নিশ্চিত। নানারকম হিসেব-নিকেশে জোটের মেরুকরণও কিছুটা জটিল হয়ে পড়েছে। ২০ দলে জামায়াত থাকায় একদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন না পাওয়া ও অন্যদিকে নাগরিক ঐক্য, গণফোরাম, বিকল্পধারা, এলডিপি ও জাসদসহ বামমোর্চার দলগুলোর ২০ দলে অন্তর্ভুক্ত হতে রাজি না থাকায় জামায়াতকে আলাদা রেখেই অন্য আরেকটি জোট গঠন অনেক দূর এগিয়ে গেছে। তাই জামায়াতের নির্বাচনী জোটে না থাকার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত।
এছাড়া মহাজোট থেকে বেরিয়ে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে নতুন নির্বাচনী জোট আত্মপ্রকাশের প্রস্তুতি চলছে। এ কারণেই হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে ইদানিং সরকারের সমালোচনায় সরব হতে দেখা যাচ্ছে। এরশাদ আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থী দলগুলোর নেতৃত্ব দেবে- এটা প্রায় নিশ্চিত। ২০ দলীয় জোট থেকে খেলাফত আন্দোলনসহ অন্তত সাতটি ইসলামী দল বেরিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে জোট হবে সবচেয়ে বড় চমক। এই জোট হবে ইসলামী আশা-আকাঙ্ক্ষার ফসল। জি এম কাদের আশা করছেন হেফাজতে ইসলামও তাদের জোটে যোগ দেবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিএনপি নেতা বলেন, ‘জোট ভাঙা, বিএনপি ভাঙা এবং বেগম জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাওয়া– একই সূত্রে গাঁথা এবং বিএনপির এই পক্ষই বিজয়ী হতে যাচ্ছে। খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারছেন না বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত। সে কারণে তাকে ছাড়াই বিএনপিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। সঙ্গে শুরু হয়েছে জামায়াতবিহীন জোট মেরুকরণের প্রক্রিয়াও।
সুত্র: banglanewspost
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com