ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও আখাউড়া উপজেলায় বর্তমান সরকারের আমলে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড হয়েছে। চাকরি পেয়েছেন এলাকার নয়শ’ এর মতো চাকরি প্রার্থী। দুই উপজেলাতেই শতভাগ বিদ্যুতায়নসহ আরো কিছু ঈর্ষণীয় সাফল্য রয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে।
আর এ সবই হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের হাত ধরে। আনিসুল হক এলাকার মতো সারাদেশেই সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। সাধারণ মানুষের ফোন কল রিসিভ করা, সপ্তাহের তিন দিন ঢাকার গুলশানের অফিসে নিজ সংসদীয় এলাকার নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে সাক্ষাত দেয়া, নির্বাচনী এলাকায় নিয়মিত আসার মতো কিছু বিষয়ে তিনি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।
আর এসব কারণে আইনমন্ত্রীর উপরই ভরসা আওয়ামী লীগের। আইনমন্ত্রীও এরই মধ্যে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে ভোট চাইতে শুরু করেছেন। ফলে আওয়ামী লীগে আগে থেকেই নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে দুই উপজেলাতেই।
তবে সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শাহ আলম ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা শ্যামল কুমার রায় এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন। যদিও শাহ আলমের পক্ষে এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা নেই। এলাকায়ও তিনি আসেন না। তাঁর দুই একজন অনুসারি ফেসবুকে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে বিগত সংসদ নির্বাচনের পরপর শ্যামল কুমার রায় মাঠে নামলেও এখন আর তাঁকে দেখা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী নিয়ে বিএনপিতে চলছে প্রবীণ ও নবীনের লড়াই। cÖªপ্রবীন বিএনপি নেতা সাবেক সংসদ সদস্য মুশফিকুর রহমান ও আখাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মুসলিম উদ্দিনের পাশাপাশি নবীন প্রার্থী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা নাছির উদ্দিন হাজারী মনোনয়ন প্রত্যাশী। এলাকায় তৎপরতা না থাকলেও বিএনপি নেতা মামুনূর রশিদ মোহন ও শাকিল ওয়াহেদ সুমন মনোনয়ন চাইতে পারেন।
বিভিন্ন কারণেই বিএনপিতে নির্বাচনী আবহ নেই। দলটির পক্ষ থেকে রাজনৈতিক কর্মকান্ডও খুব একটা পালন করা হচ্ছে না। সাবেক সংসদ সদস্য মুশফিকুর রহমানের প্রতি দলটির নেতা-কর্মীদের আস্থা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তিনি এলাকায় আসেন না বলে দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। দীর্ঘ প্রায় এক বছর পর ৩০ এপ্রিল মুশফিকুর রহমান আখাউড়ায় এলেও বিএনপি নেতার কুলখানি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে চলে যান। সেখানে গুটিকয়েক নেতা-কর্মীর সঙ্গে ওনার দেখা হয়। কয়েকদিন দেশে থেকে তিনি আবারো কানাডা চলে গেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে বিএনপি থেকে আখাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুসলিম উদ্দিনও মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানাগেছে। তিনি এলাকায় ক্লিন ইমেজধারী হিসাবে পরিচিত। এছাড়া প্রতিকুল পরিবেশে উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওযার বিষয়টিও তাকে এগিয়ে রাখতে পারে বলে জানাগেছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি মনোনয়ন পেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে অনেক নেতাকর্মীরা মনে করেন।
আরেক প্রার্থী নাছির উদ্দিন হাজারী বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ নিচ্ছেন। দলটির সিনিয়র নেতাদেরকে তাঁর সঙ্গে এখনো দেখা যাচ্ছে না। তবে কসবায় তিনি এরই মধ্যে নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করতে পেরেছেন। বলা চলে ওই উপজেলায় মুশফিকুর রহমান ও নাছির উদ্দিন হাজারি কেন্দ্রিক দুইভাগে বিভক্ত বিএনপি। আখাউড়াতেও তিনি নিজের পক্ষ ভারী করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।
জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা আখাউড়া ও কসবাতে খুব একটা ভালো নয়। দলটির কেন্দ্রীয় নেতা তারেক আদেল এ আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দলকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সাংগঠনিক ভিত্তি ততটা মজবুত না হওয়ায় জাতীয় পার্টি এ আসন থেকে খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
এ আসন থেকে বাংলাদেশ ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী হিসাবে মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়াকে মনোনয়ন দেয়ার চিন্তা করছে দল। তবে শারিরিক অসুস্থতায় মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এ অবস্থায় দলটি নতুন প্রার্থী খোঁজ করছে।
আ. লীগে আনিসুল হক
দেশ বরেণ্য আইনজীবী বিশিষ্ট আইনজীবী আনিসুল হক রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তাঁর পিতা অ্যাডভোকেট মরহুম সিরাজুল হক ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌসলি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অ্যাডভোকেট আনিসুল হক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবারের মতো এ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি আইনমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রীসভায় স্থান পান। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই অ্যাডভোকেট আনিসুল হক তার নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ডের দিকে নজর দেন। দুই উপজেলাতেই দলকে গুছানোর দায়িত্ব নেন। নেতা-কর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়কের দায়িত্ব নেন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন তৃণমূল পর্যায়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সু-সংগঠিত। আনিসুল হকের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ সময় পর দলীয় কার্যালয় পায় আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। সাবেক সংসদ সদস্য শাহ আলম দলে যে বিশৃংখল পরিস্থিতি রেখে যান তা থেকে উত্তরণ ঘটান আনিসুল হক।
নেতা-কর্মীরা জানান, আনিসুল হকের আমলে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। বিশেষ করে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো নতুন করে করা হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দুই উপজেলার অন্তত ৯০ ভাগ রাস্তার কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আনিসুল হকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দুই উপজেলাতে শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে।
আনিসুল হকের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন প্রায় নয়শ’ জন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, চাকরি নিতে গিয়ে ঘুষ দিতে হয়েছে এমন অভিযোগ নেই। বরং চাকরির জন্য ঘুষ সেধে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছে। মামলা হয়েছে একাধিক। আইনমন্ত্রীর সহকারি একান্ত সচিব অ্যাডভোকেট রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবন মূলত চাকরির বিষয়টি তদারকি করেছেন। চাকরির জন্য তাঁকে ঘুষ সেধে অনেকে গ্রেপ্তার হন।
এদিকে আইনমন্ত্রী ঈর্ষণীয় সাফল্যে কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদেরকে ঘিরে ফেসবুক কেন্দ্রিক নোংরা রাজনীতি চলছে। নামে-বেনামের কিছু ফেসবকু আইডি থেকে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নামে আপত্তিকর মন্তব্য করা হচ্ছে।
সর্বশেষ আওয়ামী লীগ নেতা ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এস. এম এ মান্নানের সঙ্গে তাঁর মেয়ের তোলা ছবি পোস্ট দিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এম.পির সহকারি একান্ত সচিব ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওছার ভূঁইয়া জীবনের বিরুদ্ধে বেশকিছু আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেয়া হয়েছে ফেসবুকে। এমনকি মন্ত্রী কেন্দ্রিকও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের দাবি, একজন এম.পি হিসেবে এলাকার উন্নয়নে আইনমন্ত্রীর যে সফলতা সেটিকে ম্লান করতেই একটি চক্র ফেসবুকে এ ধরণের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরণের কাজ করা হচ্ছে।
অবশ্য এসব ঘটনায় কসবা থানায় একাধিক মামলা ও সাধারন ডায়রি হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. শাহ আলমসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এসবের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে কসবায়। তবে আইডিগুলো থেকে অপপ্রচার থামেনি। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ সম্প্রতি কসবার এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করে।
কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মনির হোসেন ও সাধারন সম্পাদক আফজাল হোসেন খান রিমন বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শাহ আলম ও তাঁর অনুসারিরা ফেসবুকে ভুয়া নামে আইডি খুলে নানা অপপ্রচার করছে। এর মধ্যে ‘কসবা-আখাউড়া আওয়ামী লীগ’ নামে একটি আইডি থেকে যাচ্ছেতাই লেখা হচ্ছে। মূলত আইনমন্ত্রীর সাফল্যকে ম্লান করতেই এ ধরণের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তাঁরা আরো বলেন, ‘কসবা-আখাউড়া আওয়ামী লীগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিকল্প কেউ নেই। আনিসুল হকের মতো মানুষকে সংসদ সদস্য হিসেবে পাওয়ার কোনো এলাকার মানুষের জন্য ভাগ্যের ব্যাপার। আনিসুল হকের কথা এখন সাধারন মানুষের মুখে মুখে। আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন বলে আমরা শতভাগ আশাবাদী।’
আইনমন্ত্রীর সহকারি একান্ত সচিব অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওছার ভূঁইয়া জীবন বলেন, ‘ফেসবুকে অপপ্রচারের মাধ্যমে একটা অস্থিতিশিল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে একটি চক্র। ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর মেয়ের ছবি দিয়ে যে পোস্ট দেয়া হয়েছে এর চেয়ে জঘন্য আর কি হতে পারে। এসব ঘটনায় কসবার মানুষের মনে দিনকে দিন ক্ষোভ বেড়ে চলছে।’
আইনমন্ত্রীর ঘনিষ্টজন ও আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘আমাদের ভাগ্য ভালো যে আনিসুল হকের মতো একজন মানুষকে সংসদ সদস্য হিসেবে পেয়েছি। ওনার চিন্তা চেতনায় শুধুই এলাকায় উন্নয়ন। গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েও তিনি এলাকায় যে সময় দিচ্ছেন তা ভাবা যায় না।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা নির্দ্বিধায় ওনাকে চাই।’
কসবা পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. এমরান উদ্দিন জুয়েল বলেন, ‘কসবা-আখাউড়া আনিসুল হকের কোনো বিকল্প নেই। এলাকায় তিনি স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন কাজ করেছেন। দলকেও তিনি বেশ সুসংগঠিত করেছেন। তিনি কসবা-আখাউড়া আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী’।
আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের এক নেতা বলেন, ‘এ আসন থেকে মন্ত্রী যদি নির্বাচন না করেন কিংবা অন্য কোনো কারণে তিনি নির্বাচনে না আসেন তাহলে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা শ্যামল কুমার রায় এগিয়ে থাকবেন। কসবা-আখাউড়াতে ওনার অনেক কর্মী-সমর্থক রয়েছে।’
বিএনপিতে লড়াই
এ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন নিয়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে প্রবীণ নেতা বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সচিব মুশফিকুর রহমান, আখাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুসলিম উদ্দিন এবং বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন হাজারীর মধ্যে। সাবেক সচিব মুশফিকুর রহমান এই আসন থেকে ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তী নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে হেরে যান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন। দলের একটি অংশ তাঁকে এম.পি প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। কিন্তু দলীয় কর্মকান্ডে কিংবা দলের নেতা-কর্মীদের ওনাকে কাছে পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ওনি এখন অনেকটা জনবিচ্ছিন্ন। নেতা-কর্মীরা জানান, তিনি মেয়ের সঙ্গে কানাডায় বসবাস করেন।
এদিকে বিএনপি’র প্রবাসী নেতা মামুনূর রশিদ মোহন ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ি শাকিল ওয়াহেদ সুমন এবারও মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে এলাকার তাঁদের কোনো কর্মকান্ড চোখে পড়ছে না। কেন্দ্রীয়ভাবে তাঁরা লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক আবুল মুনসুর মিশন বলেন, ‘কসবা-আখাউড়ার সকল নেতাকর্মীই মুশফিকুর রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিগুলো আমরা এখানে পুলিশি বাধার মুখে করতে পারছি না। তবে নির্বাচন কেন্দ্রিক কেন্দ্র কমিটি করার বিষয়ে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। কেন্দ্র থেকে নির্দেশ পেলেই কাজ শুরু করে দিব।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মুশফিকুর রহমানই আগামী নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থী হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তিনি এলাকায় কম আসেন বলে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কোনো দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে- এ কথাটি ঠিক না। কেননা, সারাদেশেই তো কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা যাচ্ছে না। যে কারণে ওনার আসা না আসা কোনো ফ্যাক্ট না। এছাড়া ওনি তো নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিতই যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। ওনি হলেন দলের হেভিওয়েট প্রার্থী। সব ক্ষেত্রেই ওনার একটা আলাদা মূল্যায়ন কিংবা গুরুত্ব রয়েছে।’
আখাউড়া যুবদল নেতা আক্তার হোসেন বলেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মুসলিম উদ্দিনের ক্লিন ইমেজ রয়েছে এলাকায়। প্রতিকুল পরিবেশেও নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। দলের দুরদিনে সবসময় নেতাকর্মীদের পাশে রয়েছেন তিনি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইঞ্জিনিয়ার মুসলিম উদ্দিনকে দল থেকে মনোনয়ন দেয়ার দাবী জানিয়েছেন তিনি।
আখাউড়া উপজেলা বিএনপি নেতা মো. আবুল ফারুক বকুল বলেন, ‘দলের দু:সময়ে নেতা-কর্মীদের পাশে রয়েছেন নাছির উদ্দিন হাজারী। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি এলাকায় এসে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছেন। আশা করছি দল ওনাকে মূল্যায়ন করবে।’
কসবা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আন্দোলন সংগ্রামের জন্য দলের সবাই সাবেক সংসদ সদস্য মুশফিকুর রহমানের দিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু ওনি দলের দু:সময়ে দেশের বাইরে চলে যান। বহুদিন পর তিনি এলেও দলের কোনো বিষয়ে নির্দেশনা দেন নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন দলের দু:সময়ে কাজ করছেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা নাছির উদ্দিন হাজারী। বিভিন্ন কর্মকান্ডে আমরা ওনার পাশে আছি। আশা করছি ওনি আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে বিজয়ী হতে পারবেন।
জাতীয় পার্টি
সাংঠনিকভাবে জাতীয় পার্টির অবস্থান নাজুক হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কসবা উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও ঢাকা মহানগর জাতীয় পার্টির নেতা তারেক. এ. আদেল এ আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি এই আসনে জাতীয় পার্টির একমাত্র প্রার্থী। তার পিতা মরহুম জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ আদেল ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ডেপুটি মেয়র, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ছিলেন।
এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক মো. নজরুল হক ধনু বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক অবস্থা খুব ভালো। পুরোনো কমিটিগুলো ভেঙ্গে নতুন কমিটি করার চেষ্টা চলছে। এ আসনে তারেক আদেল আমাদের প্রার্থী। মহাজোট থেকে আসনটি জাতীয় পার্টিকে দেয়ার জন্য দাবি জানানো হবে।’
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com