বিশাল, ইপন, সায়মন, পূর্ণতা, অথৈ- সবাই শিশু। পড়ালেখা, খেলাধুলা, সংস্কৃতি অঙ্গনে সুনামের স্বাক্ষর রেখে চলা ওই শিশুরা অনুষ্ঠান মঞ্চে। সভাপতি, প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে মঞ্চে বসানো ওই শিশুরা বক্তব্য রাখলেন।
অনুষ্ঠানের দর্শক সারিতে বড়জনেরা। রয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ আরো অনেকে। ঘন্টখানেক সময়জুড়ে বসে থেকে পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করলেন তাঁরা।
কালের কণ্ঠের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকিতে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা অনুষ্ঠানে এমন আয়োজন।গতকাল শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরের এ আয়োজনটি করে পত্রিকাটির পাঠক সংগঠন শুভসংঘ। এ সময় চিত্রাংকন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ২৭ জনের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যম ও তিতাস আবৃত্তি সংগঠন অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতা করে।
সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে সম্মাননা দেয়া হয় জেলার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছের বাসিন্দা ও বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মৌড়াইলে বসবাসরত মো. অহিদ মিয়াকে। খেলাঘরের প্রতিযোগিতায় জাতীয়ভাবে পুরস্কারপ্রাপ্ত আবৃত্তিশিল্পী সামিহা তাহসীন অথৈ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাবার সঙ্গে চায়ের দোকানে থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় (পিইসি) জিপিএ-৫ পাওয়া মো. বিশাল মিয়া। শিশু সাদিয়া রহমান বিথীর উপস্থাপনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জাতীয় অনুর্ধ্ব-১৬ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় শামছুল ইসলাম ইপন, অর্ধশতাধিক গল্পের বই পড়া কাজী সায়মন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আবৃত্তি করেন শিশু সীমরান আলম পূর্ণতা।
অনুষ্ঠানে দর্শকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার। আলোচনা করতে গিয়ে তিনি অতিথিদের প্রচলিত ধারা ভেঙ্গে এ ধরণের আয়োজনের প্রশংসা করেন। এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিয়ে শিশুরা উজ্জ্বীবিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দর্শকসারিতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদ সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম ভ‚ঁইয়া, প্রেস ক্লাব সাধারন সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পী, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. লোকমান হোসেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. জিয়াউল হক খন্দকার, সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আরজু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহবায়ক আবদুন নূর, জেলা নাগরিক ফোরামের সাধারন সম্পাদক রতন কান্তি দত্ত, তেল, গ্যাস, বিদ্যুত, বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. নাসির মিয়া, সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. বাহারুল ইসলাম মোল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যমের সম্পাদক নিয়াজ মুহাম্মদ খান বিটু, তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের পরিচালক মো. মনির হোসেন, খেলাঘর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাধারন সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার, সাংবাদিক মো. মোশারফ হোসেন বেলাল, উজ্জল চক্রবর্তী, খন্দকার শফিকুল আলম, চয়ন বিশ্বাস, মো. জুয়েলুর রহমান, ড্রিম ফর ডিজঅ্যাবিলিটি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মো. হেদায়েতুল আজিজ মুন্না, আবৃত্তিশিল্প বাছির দুলাল, প্রবর্তক আবৃত্তি সংগঠনের পরিচালক সোহেল আহাদ, শিক্ষক কাজী মো. ইকবাল, বিডি ক্লিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সমন্বয়ক মো. সোহান মাহমুদ। পরে বিশিষ্টজনদের নিয়ে একটি আনন্দ র্যালি করা হয়।
চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার বিভিন্ন বিভাগে বিজয়ীরা হলো, নুরজাহান বিবি কান্তা, জান্নাতুল ফেরদৌস জান্নাতি, সামিয়া আক্তার যুঁথী, তন্ময় দেবনাথ, পিয়াস পাল, কৃষ্ণ বনিক, নুরুল আফসার, মিশকাত আহমেদ, তানশিত আহমেদ রাফসান, সাকিবুল হাসান, খন্দকার তরুণী, আরিয়ান রহমান সালমান, আনুছউজ্জামান নাফি, আরিব মুনতাসির, তাজরীন আরিশা। আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলো, রেজা এ রাব্বি, মো. সুজন সরকার, সোহাগ রায়, রাইয়া রহমান, তাহিয়া তাবাসসুম দিহান, খন্দকার উম্মে হাবিবা, লুবাবা মাহফুজাহ, অসিউর রহমান আলভী, কাজী রাইয়ান আলম, জুবায়ের রহমান, আনাছুজ্জামান নাফি, রিদা মেহেক যারা।
বিজয়ী ২৭ জনের হাতে শুভসংঘের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট তুলে দেন মঞ্চে থাকা অতিথিরা। মুক্তিযোদ্ধা মো. অহিদ মিয়াকে নগদ ১০ হাজার টাকা, একটি ক্রেস্ট ও উত্তরীয় দেয়া হয়। চিত্রাংকন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় দেড় শতাধিক শিশু অংশ নেয়। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে বৃহস্পতিবার বিকেলে আবৃত্তি প্রতিযোগিতা ও শুক্রবার সকালে আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com