ব্রেকিং

x

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গরিবের চালে অনিয়ম, আওয়ামী লীগ নেতার ডিলারশীপ বাতিল

বুধবার, ১৩ মে ২০২০ | ৬:৫৩ অপরাহ্ণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গরিবের চালে অনিয়ম, আওয়ামী লীগ নেতার ডিলারশীপ বাতিল

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহ আলমের ওএমএস ডিলার বাতিল হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে জেলা ওএমএস কমিটির সভায় ডিলারশিপ বাতিলে সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে ৮৪ ধনী ব্যক্তি ও দ্বৈত নাম ‍এক ঘরের দুইজনের নাম, ঠিকানা খোঁজে না পাওয়া এমন আরো সাতজনসহ মোট ৯১ জনের তালিকাও বাদ দেয়া হয়েছে বলে ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়।


ওএমএস কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌঁলা খান ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন। জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলমের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী, কন্যাসহ পরিবারের ১২ সদস্যের নাম ওএমএস চাল ক্রয়ের তালিকায় রাখার অভিযোগ উঠে। এছাড়া একাধিক ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের স্বজন ও স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নাম ছিলো।


জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী ডিলারশীপ ও স্বচ্ছলদের নাম বাতিল হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জানান, কারণ দর্শানোর নোটিশে সন্তোষজনক জবাব না থাকায় মো. শাহ আলমের ওএমএস ডিলারশীপ বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে পৌরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তালিকা থেকে ৯১ জনের নামও বাদ দেয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে মো. শাহ আলম তালিকায় তাঁর স্ত্রীর নাম থাকার বিষয়ে দু:খ প্রকাশ করেন। তবে অন্যান্য স্বজনরা গরীব বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে স্থানীয় সংশ্লিষ্টরা এসব নাম
তালিকায় উঠিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে চালের তালিকায় শাহ আলমের স্ত্রী মোছাম্মৎ মমতাজ আলম, মেয়ে আফরোজা, ভাই মো. সেলিম (পরিবহন শ্রমিক নেতা), ভাই মো. আলমগীর, বোন শামসুন্নাহার, ভাইয়ের ছেলে প্রবাসী নাছির, শ্যালক তাজুল ইসলাম, শ্যালক শফিকুল ইসলাম, আরেক শ্যালকের স্ত্রী জান্নাতুল ইসলাম, বোনের তিন দেবর মতিউর রহমান, মাহবুবুর রহমান ও লুত্ফুর রহমানের নাম রয়েছে।

এ ছাড়া ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তালিকায় জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন দুলাল এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুণ অর রশিদের নাম রয়েছে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তালিকায় কাউন্সিলর মাকবুল হোসেনের ভাই গোলাম রাব্বানী, হানিফ ও আরিফ রয়েছেন। হানিফ ও রাব্বানী পেঁয়াজ রসুন ব্যবসায়ী এবং আরিফ কাঁচামাল ব্যবসায়ী। এই ওয়ার্ডের তালিকার হাসেন আল-মামুন, বশির মিয়া, সেলিনা বেগম, মো. ইকবাল, মিনারা বেগম সচ্ছল। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তালিকায় নাজির মিয়া দুই কোটি টাকার মালিক, স্বচ্ছল বজলু মিয়ার এক ছেলে প্রবাসী ও এক ছেলে ইতালি, কবির মিয়া শহরের বড় কাপড় ব্যবসায়ী, নূরুল আলমের দোতলা বাড়ির তৃতীয় তলার কাজ চলমান। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তালিকায় রয়েছেন সাড়ে সাত একর জমির মালিক কানাই ঋষি এবং চাল নিতে আগ্রহী নন সচ্ছল ব্যক্তি নাদির মিয়া। এ ছাড়া মজিবুর রহমান, রহত আলী ভূঁইয়া, নকুল কুমার সাহা, বাচ্চু মিয়া, মৃণাল কান্তি রায়, নগেন্দ্র ঋষি, নারায়ণ ঋষি, অপূর্ব সাহা, আলী আজম, শেখ আলী আজহার, রাকিব ভূঁইয়া, সাহিদ ভূঁইয়া, শওকত ওসমান, নাছিমা আক্তার সচ্ছল। এ ছাড়া একই ব্যক্তির নাম
(শুভ সাহা) দুইবার রয়েছে। ২ নম্বর ওয়ার্ডে মুজিবুর রহমান, অরূপ চন্দ্র মোদক, নারায়ণ বণিক, ইন্দ্রজিৎ বণিক, বিশ্বজিৎ পালের রয়েছে বহুতল ভবন। রয়েছে স্বামী সুবীর নাথ ও স্ত্রী স্বপ্না রানীর নাম। এদিকে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আবু তাহেরের ছেলে আবু বাকের পাঁচতলা ভবনের মালিক। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জহির আহমেদ খান ও শাহাদাৎ হোসেন খান সচ্ছল। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নাছিমা চৌধুরী ও আবু জামাল ভূঁইয়া দ্বিতল ভবনের মালিক। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ডিসি অফিসের কর্মচারী কাজল চন্দ্র বিশ্বাসের নাম আছে। এ ছাড়া সুহেদা বেগম, কুসুম সরকার, মালতী দেবের নাম তালিকায় থাকলেও তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। শামীমা আক্তারের নাম উঠেছে দুইবার। এ ছাড়া তিনতলা বাড়ির মালিক সুধীর দাস, বেসরকারি চাকুরে সৈকত করের নাম রয়েছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দোতলা বাড়ি আছে এমন পাঁচজন—কিতাব আলী, জীবন সাহা, নেরোজ আলী, সাকিল ও উপল মালাকারের নাম উঠেছে। এ ছাড়া ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রউফের দুই ছেলে প্রবাসে থাকলেও তালিকায় নাম রয়েছে।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!