ব্রেকিং

x

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খোদ পুলিশের বিরুদ্ধেই তাণ্ডবের অভিযোগ

শনিবার, ২৩ জুন ২০১৮ | ১২:৫৮ অপরাহ্ণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খোদ পুলিশের বিরুদ্ধেই তাণ্ডবের অভিযোগ
ছবি-অনলাইন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে খোদ পুলিশের বিরুদ্ধে ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও স্থানীয়দের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশি তাণ্ডবের পর থেকেই পুরো গ্রাম পুরুষশূণ্য হয়ে পড়েছে। একটি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ঈদের দু’দিন পর নবীনগর থানা পুলিশ ওই গ্রামে ঢুকে ঘর-বাড়ি ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী।


এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গেল মার্চ মাসে দুলাল মিয়া (৪০) নামে লক্ষ্মীপুর গ্রামের এক বাসিন্দা প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন। দুলাল নিহত হওয়ার পরই উভয়পক্ষের ঘর-বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। তাণ্ডব চলে গ্রামের খাঁ বাড়ি, ভূইয়া বাড়ি, হুরাগাজীর বাড়ি, কাতাইরা বাড়ি ও লাডুর বাড়িতে। এরপর থেকেই অশান্ত হয়ে পড়ে শান্ত লক্ষ্মীপুর গ্রাম।


পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারীরা বাড়িতে এলেও আনন্দ করতে পারেননি কেউই।

ng1

স্থানীয়রা জানান, গত ১৮ জুন লক্ষ্মীপুর গ্রামের দু’পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়। স্থানীয় তাহের মিয়ার বাড়ির লোকজন আরমান নামে এক তরুণকে মারধর করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরে নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম সিকদারের নেতৃত্বে চারটি স্পিডবোটে করে পুলিশ আসে লক্ষ্মীপুর গ্রামে। ওই গ্রামে থাকা পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পের সদস্যরাও যোগ দেন থানা থেকে আসা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে। ওইদিন গ্রামের দফে আলী বাড়ির আবু সুফিয়ান, মোস্তফা, মোল্লাবাড়ির জলিল মিয়া, ভূইয়া বাড়ির আবু কালাম, জালাল মিয়া ও খায়ের মিয়ার বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে পুলিশ।

‘ওসি আসলাম সিকদারের নেতৃত্বে পুলিশ এক পক্ষের কাছ থেকে টাকা খেয়ে সেদিন গ্রামে তাণ্ডব চালায়’ বলে অভিযোগ করেন গ্রামের বয়ষ্করা। সেদিন অনেককে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আবার ছেড়ে দেয়া হয়।

লক্ষ্মীপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা আবদুস সামাদ জানান, তারা ৪ জন গ্রামের ক্লাবঘরে বসেছিলেন। সেখান থেকে পুলিশ তাদের ধরে এনে একটি বিল্ডিংয়ে ঢুকিয়ে তালা মেরে দেয়। পরে তাদের ছাড়িয়ে নিতে মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা করে দাবি করে পুলিশ। এরপর ২০ হাজার টাকায় ছাড়া পান তারা।

নিহত দুলালের বোন হেনা বেগম বলেন, পুলিশ আমাকেও ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। আমার ভাই খুন হয়েছে। অথচ আমিই পুলিশের নির্যাতনের শিকার। আইনের লোককে ঘরে ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করতে জীবনেও শুনিনি।

মাজেদা বেগম নামে এক গৃহবধু জানান, তাকেও সেদিন থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। পরে ৩০ হাজার টাকায় ছাড়া পেয়েছেন।

এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) নেতৃত্বে ছয় কনস্টেবল রয়েছেন লক্ষ্মীপুর গ্রামের অস্থায়ী ক্যাম্পে। ঘটনার দিন ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন এসআই মাহবুবুর রহমান।

তিনি বলেন, একপক্ষ আরেক পক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। যারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত তাদেরকেই ধরা হয়েছে।

নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম সিকদার পুলিশের বিরুদ্ধে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এগুলো ঠিক না। তারা মিথ্যা কথা বলছে। যারা এলাকায় বসবাস করছে তারাই ভাঙচুরে জড়িত।

ওই দিনের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৭ জনকে আটক করে আমরা আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছি।

-জাগোনিউজ

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!