চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের চিকিৎসক ইনজামামুল হক সিয়াম। বয়সে তরুণ এই চিকিৎসক মাত্র সাতদিনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে জয় করে সুস্থ্য-স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। এবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক বৃদ্ধকে নিজের প্লাজমা দিয়েছেন তিনি।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটে ৬৫ বছরের ওই বৃদ্ধের জন্য প্লাজমা দেন তিনি। আক্রান্ত বৃদ্ধ তিনদিন ধরে ঢাকার গ্রীনলাইফ হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন। তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছে পরিবারের লোকজন। ওই বৃদ্ধের বড় ছেলে জানান, তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের মধ্যপাড়া মহল্লায়। তার বাবা শহরের সুপার মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী। করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়ায় গত ২৬ মে পারিবারের সবাই কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন পরীক্ষায় পাঁচ সদস্যের পরিবারের সবার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সবার শুধুমাত্র জ্বর থাকলেও ওই বৃদ্ধের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরবর্তীতে তাকে ঢাকায় নেয়া হয়। শ্বাসকষ্ট তীব্র হওয়ায় গ্রীনলাইফ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় বৃদ্ধকে।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় এসএসসির ফলাফলে সেরা সাফল্য, পাসের হারে জেলায় প্রথম স্থান লাভ করেছে
তিনি বলেন, অনেকেই প্লাজমা থেরাপির মাধ্যমে সুস্থ্য হয়েছেন বলে শুনেছি। বাবার অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় প্লাজমা দেয়ার কথা চিন্তা করি। সেজন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ে যোগাযোগ করে বলি একজন প্লাজমা ডোনারের ব্যবস্থা করে দিতে। শুক্রবার সকালে সিভিল সার্জন অফিস থেকে ডা. সিয়ামের কথা বলা হয় আমাকে। এরপর তার সাথে যোগাযোগ করলে দুপুরেই তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকায় চলে আসেন প্লাজমা দিতে। তার কাছ থেকে ৫০ মিলি প্লাজমা নেয়া হয়েছে। রাতেই বাবাকে এই প্লাজমা দেয়া হয়েছে।
ডা. ইনজামামুল হক সিয়াম বলেন, গত ৩০ এপ্রিল কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য আমার নমুনা দিয়েছিলাম। রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর আমি নিজ বাসায় আইসোলেশনে ছিলাম। পরবর্তীতে ৭ মে আমার পরবর্তী রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। আমার প্লাজমা দিয়ে যদি একজন আক্রান্ত রোগী সুস্থ্য হন তাহলে সেটি স্বার্থকতা। সেজন্য আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বৃদ্ধকে প্লাজমা দিয়েছি। জীবন বাঁচানোর মালিক মহান সৃষ্টিকর্তা। আমি শুধু নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় করোনার উপসর্গ নিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু, বাড়িঘর লকডাউন
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার (৩০ মে) পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩১ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন দুইজন।।আর আইসোলেশন সেন্টার থেকে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৮ জন।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com