সংবাদ প্রকাশ সংক্রান্ত ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয় সাংবাদিককে হাত-পা কেটে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। জেলার কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল কাওছার ভূঁইয়া জীবন ও পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছায়েদুর রহমান মানিকের পক্ষ নিয়ে এই হুমকি দেয়া হয়।
তবে এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার কসবা থানায় ছায়েদুর রহমানের করা সাধারণ ডায়রিতে (জিডি) তিনি উল্লেখ করেছেন, হুমকি দেয়া আইডিগুলো ফেক। এসব আইডি’র বিষয়ে তিনি অবগত নন। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়ে তিনি এ বিষয়ে সাধারন ডায়রি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার তালিকায় অনিয়ম নিয়ে কসবার একাধিক জনপ্রতিনিধি ও এডিপি’র কাজ না করেই বিল উত্তোলনের অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশিত হয়। এরই জের ধরে ‘জীবন ভাইয়ের সৈনিক’, ‘মানিক চেয়ারম্যানের সৈনিক’ নামে দুইটি আইডিতে থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬জন সাংবাদিককে হুমকি দেয়া হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব দীপক চৌধুরী বাপ্পী, আখাউড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মানিক মিয়া, দেশ রূপান্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি মো. মনির হোসেন, সময় টিভির ব্যুরো চিফ উজ্জল চক্রবর্তী, এনটিভির নিজস্ব প্রতিবেদক শিহাব উদ্দিন বিপু,কালের কণ্ঠের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবুকে কসবায় পেলে হাত-পা কেটে রেখে দেয়া হবে বলে এসব আইডি থেকে উল্লেখ করা হয়।
ছায়েদুর রহমান ওই জিডিতে উল্লেখ করেন, ‘সজিবুর রহমান নামে একটি আইডি থেকে উপজেলা পরিষদ চেয়াম্যান রাশেদুল কাওছার ভূঁইয়ার নামেও অপপ্রচার চালানো হয়।’ তাঁর নামের যে আইডি থেকে সাংবাদিকদেরকে হুমকি দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান।
এদিকে বিষয়টি জানার পরই পরই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোবাইল ফোনে কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক রাশেদুল কাওছার ভূঁইয়া জীবনের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিতে বলেন।
কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও ঠিকাদার এমদাদুল হক পলাশ বলেন, ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও অন্যান্য চেয়ারম্যানের বিরোধ সৃষ্টির জন্য কোনো একটা পক্ষ সুযোগ নিতে এ ধরণের কাজ করেছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজেই জিডি করার উদ্যোগ নিয়েছেন।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব দীপক চৌধুরী বাপ্পী বলেন, ‘ফেসবুকে এসব হুমকি-ধামকি কাপুরুষদের কাজ। হুমকি-ধামকির কারণে সত্য সংবাদ প্রকাশ থেকে আমরা কেউ পিছপা হবো না। প্রেস ক্লাবের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা করছি।’
প্রেস ক্লাবের মামলা
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে মানহানিকর ভিডিও প্রচার ও স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে লিটন হোসেন জিহাদ ও তার ছোট ভাই আর জে শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। গত ৭ জুলাই প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব দীপক চৌধুরী বাপ্পী বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় বলা হয়, ১৬ জুন স্ট্যাটাস ও ১৭ জুন ভিডিও প্রচারের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অনেক অশ্রাব্য কথা বলা হয়। লিটন হোসেন জিহাদ অনলাইন টেলিভিশন ‘পথিক টিভি’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com