সীমান্তে এলাকায় প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) মতৈক্যে পৌঁছেছে। ফলে চলতি বছর এখন পর্যন্ত একটিও হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেনি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পিলখানায় বিজিবি সদর দফতরে আয়োজিত ‘বিজিবি-বিএসএফ’ এর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে ৪৬তম সীমান্ত সম্মেলনের বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র নয়, এ বিষয়ে আমরা উভয় বাহিনী একমত হয়েছি। সীমান্তে কোনো প্রাণনাশ গ্রহণযোগ্য নয়। বিএসএফ এখন নন লিথাল অস্ত্র ব্যবহার করছে। ফলে বিএসএফ সদস্যরাও বিভিন্ন সময় আক্রমণের স্বীকার হচ্ছেন। আত্মরক্ষার্থে বাধ্য হয়েই তারা নন লিথাল অস্ত্র ব্যবহার করছেন। সীমান্ত হত্যা ক্রমেই কমে আসছে, চলতি বছর চারমাসে একটিও হত্যার ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে বিএসএফ ডিজি শ্রী কে কে শর্মা বলেন, সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে আমরা সচেষ্ট। আমরা চাই না সীমান্তে কোনো ধরনের মানবাধিকার লংঘিত হোক।
সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেনসিডিল প্রবেশের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসএফ ডিজি বলেন, ফেনসিডিল ভারতে নিষিদ্ধ, বৈধভাবে ফেনসিডিল উৎপাদন হয় না। এ বিষয়ে আমাদের নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতবছর প্রায় ৫ লাখ ৭০ হাজার বোতল ফেনসিডিলসহ বিপুল পরিমাণ অন্য মাদক আটক করা হয়েছে। ফেনসিডিলসহ বাংলাদেশে যে কোনো মাদক প্রবেশ ঠেকাতে আমরা সচেষ্ট।
দেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সময় ভারতের অংশে কিছু রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছিল বলে শোনা যায়। কিন্তু বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে পুশব্যাকের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জনতে চাইলে সাফিনুল ইসলাম বলেন, বহিরাগত নাগরিকদের অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের কাজে লাগিয়ে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যেন কোনো কিছু করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি।
ফেলানী হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি ভারতীয় আদালতে বিচারাধীন, এ বিষয়ে কোনো কথা না বলাই উত্তম।
নির্বাচন সামনে রেখে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্র অনুপ্রবেশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবারের সম্মেলনে এটা আলোচ্য বিষয় ছিল না।
সম্মেলনে সীমান্ত অপরাধপ্রবণ এলাকায় নজরদারি বাড়াতে উভয়পক্ষ একমত হয়েছেন। আন্ত:সীমান্ত অপরাধপ্রবণ এলাকার ম্যাপিং বছরে দু’বার হালনাগাদ করা হবে বলেও জানানো হয়।
উভয় বাহিনী সীমান্তে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে যৌথভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।
এ সময় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরিত হয়। গত ২৩ এপ্রিল শুরু হওয়া এ সম্মেলনে বিএসএফ ডিজি শ্রী কে কে শর্মার নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল ও বিজিবি ডিজি সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেন। ২৭ এপ্রিল পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা আইসিপিতে যৌথভাবে জয়েন্ট রিট্রিট সিরিমনি উদ্বোধন হবে এবং একই দিন ভারতীয় প্রতিনিধিদল দেশে ফিরবেন।
সুত্র: বাংলানিউজ
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com