স্ত্রী টুম্পা সারাক্ষণ ফেসবুকে চ্যাট করতে ব্যস্ত। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে তাঁর অতিরিক্ত আসক্তির কারণে, লাটে উঠেছিল রান্নাবান্না থেকে শুরু করে সাংসারিক অন্যান্য কাজকর্ম। দিনের পর দিন তাঁর এই নেশা বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ দিনই স্বামীই রান্নাবান্না করতেন। একইসঙ্গে তাঁর সন্দেহ হয়, স্ত্রী কোনও অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। যে কারণে ফেসবুক করা বেড়ে গিয়েছে। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে শুরু হয় অশান্তি। ক্রমেই তা বাড়তে থাকে। বুধবার দুপুরে স্বামী বাড়ি ফিরে দেখেন, স্ত্রী দুপুরের খাবার করেননি। স্বামীকেই সমস্ত রান্নাবান্না করতে হয়। রান্না চলাকালীনই দুজনের মধ্যেই শুরু হয়ে তর্কাতর্কি। অশান্তি চরমে ওঠে। এরপর অভিযুক্ত মেজাজ হারিয়ে হঠাৎই স্ত্রীর মাথায় চপার বসিয়ে দেন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁর শ্বাসরোধও করেন স্বামী। ধরা পড়ার পর পুলিসের কাছে খুনের কথা কবুল করে, চাঞ্চল্যকর এই তথ্য দিয়েছেন স্বামী সুরজিৎ পাল। শুক্রবার ধৃতকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিসি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন অভিযুক্তকে। ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমভঙ্গের আলীপুরের চেতলায়।
চেতলায় গৃহবধু খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে তদম্তকারী অফিসাররা প্রথম থেকেই স্বামীর দিকে সন্দেহ করছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে এমন কিছু জিনিস উদ্ধার হয়, যা থেকে তাঁরা বুঝতে পারেন, সুরজিতই খুনের ঘটনায় জড়িত। খুনের পর পলাতক থাকায় তাঁর প্রতি সন্দেহ আরও দৃঢ হয়। গোয়েন্দারা অনুমান করেন, অভিযুক্ত রাজ্য ছেড়ে পালাতে পারে। সেই মতো হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনে দুটি টিম পাঠানো হয়। এর মাঝে রাত একটা নাগাদ অভিযুক্ত নিজেই লালবাজারে এসে জানান, তিনি তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছেন। এরপরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কিন্তু খুনের পিছনে কী কারণ রয়েছে? তদন্ত করতে গিয়ে অফিসাররা জেনেছেন, টুম্পার স্বামী তাঁর শ্যালিকার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। যা পচ্ছন্দ হয়নি স্ত্রীর। এই নিয়ে প্রথম গোলমালের সূত্রপাত। বিগত বছরের নভেম্বর মাসে। ক্রমেই দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। এরপরই টুম্পাদেবী ফেসবুকের প্রতি আস্তে আস্তে আসক্ত হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ। একাধিক পুরুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান। যা দেখে তাঁর সন্দেহ হয়, স্ত্রী কারও সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছেন। স্বামী পুলিসকে জানিয়েছেন, ফেসবুক করা নিয়ে দু’একবার তিনি প্রতিবাদও করেন। কিন্তু স্ত্রী তাতে কান দেননি। যা থেকে সাংসারিক অশান্তি বাড়তে থাকে। অভিযুক্তের দাবি, বেশিরভাগ দিন বাড়ি ফিরে তিনিই সব রান্নাবান্না করতেন। তাকে কাজ করতে দেখেও স্ত্রী বেডরুমে অন্যের সঙ্গে চ্যাট করতে ব্যস্ত থাকতেন। একাই খাওয়াদাওয়া সেরে শুয়ে পড়তেন ধৃত। এই নিয়ে স্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ ক্রমেই বাড়তে থাকে। তখনই তিনি ঠিক করেন, স্ত্রীকে খুন করবেন। বুধবার রান্না করতেই করতেই সুরজিৎ টুম্পার সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর প্ল্যানমাফিক টুম্পাদেবীকে খুন করেন স্বামী। সুত্র: বর্তমান
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com