১৩ বছর বয়সী পথশিশু মনির হোসেন। আখাউড়া রেলস্টেশনের এক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুকের সহযোগী হিসাবে কাজ করে তার জীবন চলছে। এক বছর আগে বাবা-মায়ের সাথে অভিমান করে বাড়ি থেকে চলে আসে আখাউড়ায়। নিজের ভুল বুঝতে পেরে মনির এখন বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যেতে চাইছে।
ঈদের দিন বিকালে আখাউড়া সড়ক বাজার ফুটপাতে কথা হয় শিশু মনিরের সাথে। এসময় মনির জানায়, তার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের বইসের বাড়ি গ্রামে। টঙ্গীবাড়ি মাদ্রাসায় সে পড়াশুনা করতো।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় মাদকসহ বিএনপি নেতাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোর্পদ
মনির আরো জানায়, মাদ্রাসা ফাকি দিয়ে বন্ধুবান্ধবদের সাথে ঘুরে বেড়ানোর অপরাধে তার বাবা প্রায়ই তাকে মারধর করতো। একদিন বেশী মারধর করায় বাবার সাথে অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে সেখানকার টঙ্গীবাড়ি চলে আসে। পরে টঙ্গীবাড়ি থেকে বাসে করে প্রথমে ঢাকা গুলিস্থান, পরে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে করে আখাউড়ায় চলে আসে। তার বাবার নাম জলিল মিয়া পেশায় সিএনজি চালক, মায়ের নাম বিলকিস বেগম। সরকারের দেয়া ঘরে বসবাস করে তার বাবা মা। বিল্লাল মিয়া নামে ১৯ বছর বয়সী তার বড় একটি ভাইও আছে। মনিরের নানার বাড়ি সেখানকার বারিপাড়া গ্রামে। মরন মিয়া ও অলিউল্লাহ নামে দুইজন মামাও আছে তার।
মনির জানায়, আখাউড়া আসার পর থাকা ও খাওয়ার কষ্ট দেখে সাগর নামে ১৫ বছর বয়সী এক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক ছেলে তাকে আশ্রয় দিয়েছে। সাগরের দুইটি পা ও একটি হাত নেই। সাগরের সহযোগী হিসাবে কাজ করে তার খাবার ও অন্যান্য খরচ চলছে। রাতে সাগরের সাথে আখাউড়া রেলস্টেশনে ঘুমায়। ভিক্ষুক মহলে তাকে সাগরের আপন ছোট ভাই বলেই জানে। সাগরকে কাধে নিয়ে প্রতিদিন সকালে ভিক্ষা করতে বের হয় মনির। সাগরও তাকে খুব স্নেহ করে বলে মনির জানায়।
আরও পড়ুন: ঈদের দিন পেটভরে মাংস পোলাও সেমাই খেয়ে প্রতিবন্ধী পথশিশুর মুখে হাসি
মনির আরো জানায়, সে তার ভুল বুঝতে পেরেছে। লকডাউন শেষে হলেই ট্রেনে করে বাবা মায়ের নিকট চলে যাবে। পড়াশুনায় মনোযোগী হবে। বাবা মা যা বলবে তাই শুনবে। তার নিকট ফোন নাম্বার না থাকায় সে গত এক বছর যাবত মা বাবা ভাইয়ের সাথে কথা বলতে পারছে না।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com