ব্রেকিং

x

ঝুঁকির মধ্যেও মমতা নিয়ে রোগীর পাশে থাকেন নার্স

মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০ | ২:৩৭ অপরাহ্ণ

ঝুঁকির মধ্যেও মমতা নিয়ে রোগীর পাশে থাকেন নার্স

সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসে মহামারি চলছে। এই মহামারিতে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সেবা দিতে গিয়ে অনেক নার্সও আক্রান্ত হচ্ছে। মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে আক্রান্ত রোগীর পাশে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে নার্স। সেবা দিতে গিয়ে গতকাল পর্যন্ত আমাদের দেশে প্রায় ৫০০ নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই অবস্থায় আজ মঙ্গলবার নার্স দিবস হলেও করোনায় কোন কর্মসূচী পালন করছে না তারা। তবে এবার দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘বিশ্ববাসীর স্বাস্থ্যের জন্য নার্স গুরুত্বপূর্ণ’ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার পরও রোগীর পাশে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন নার্সরা। মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে আক্রান্ত রোগীর পাশে থাকছেন তারা।


গতকাল আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সানজিদা মাহমুদ তানিয়া নামে একজন নার্সের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, শুধু করোনা নয়, সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে নার্সরা নৈতিকতার জায়গা থেকেই রোগীর সেবায় নিয়োজিত থাকছেন। সার্বক্ষণিক রোগীর সেবায় নিয়োজিত থাকতে হয়। পরিশ্রমও অনেক বেশি। রোগীর সার্বিক দেখভাল করে নার্সরাই চিকিৎসককে অবহিত করেন।


তিনি ২০১১ সাল থেকে টানা ৯ বছর ধরে নার্সের কাজ করছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেসরকারী হলিল্যাব থেকে যাত্রা শুরু করে পিজি হাসপাতাল, বাংলাদেশ মেডিক্যাল্ ও বর্তমানে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সের দায়িত্ব পালন করছেন।

নার্স তানিয়া আরো বলেন, মৃত্যু পথযাত্রী রোগীর সুস্থ্য হওয়ার পেছনে নার্সদের সেবা খুবই গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখে কিন্তু নার্সদের কথা কেউ মনে রাখে না। নার্সরা নবজাতককে পৃথিবীতে আসতে সাহায্য করে আবার অনেক মৃত্যুপথযাত্রী নার্সের হাত ধরে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করে। ধর্মবর্ণ ভেদাভেদ না করে রোগীর পরিচর্যা করে।

তিনি আরো বলেন, সন্তান হারানো অনেক বাবা-মাকে শান্তনা দেয় নার্সরা, গর্ভধারিনী মায়েরা নার্সদের বুকে মাথা রেখে অশ্রু ফেলার সময় শরীরে হাত বুলিয়ে কিছুক্ষণের জন্য হলেও তার কষ্ট ভোলাতে সাহায্য করে নার্স। একজন মুর্মুষ রোগীকে নতুন করে বাচার স্বপ্ন দেখাই নার্স।

তিনি আরো বলেন, একজন রোগীর পরিচর্যার ক্ষেত্রে নার্সরা পরম মমতা নিয়ে কাজ করে। রোগীর সুস্থ্যতার জন্য ডাক্তারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে নার্স। রোগীর সুস্থ্যতার জন্য একজন নার্স অনেক কিছু করে যা বলে বুঝানো কঠিন। কাজের চাপে নিয়মিত খাবার খাওয়াও সম্ভব হয় না নার্সদের।

তিনি আরো বলেন, এতো কিছুর পরও যখন রোগীর অভিভাবক নার্সদের ধমকায় আর হুমকি দিতে শুরু করে তখন খুব কষ্ট হয়। তখন কিছু বলার বা প্রতিবাদ করার  দু:সাহসিকতা দেখায় না আমরা কারণ অভিভাকরা তখন রোগী নিয়ে দু:শ্চিন্তায় থাকেন, মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে থাকেন। কোন ক্লান্তি নেই আমাদের। রোগীর সেবা করতে গিয়ে মমতায় জড়িয়ে গেছি তাই প্রতিদিন সেবা করতে না পারলেও ভালো লাগেনা।

তিনি আরো বলেন, আজ শরির অসুস্থ্য তারপরও ছুটি নেয়নি, ছুটি নিয়ে ঘরে সময় কাটেনা বরং টেনশন থাকে রোগীদের নিয়ে, সেবা করাটাই আমার কাছে বেশী আনন্দের মনে হয়, এসব দায়িত্ববোধ থেকেই চলে আসে।

সবশেষে তিনি বলেন, নার্সিং পেশা এক সময়ে অত্যন্ত অবহেলিত ছিল। এখন এই পেশার মানোন্নয়ন করে দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দিয়েছে সরকার।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!