ত্রিদেশীয় সিরিজে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কয়েকদিন পরই ঘরের মাঠে লড়বে বাংলাদেশ। তার প্রস্তুতি হিসেবে দুটি ম্যাচ খেলছে মাশরাফি-সাকিবরা। লাল-সবুজ দুই দলে ভাগ হয়েছে দল। লাল দলের সাকিব আল হাসান এবং সবুজ দলের অধিনায়ক মাশরাফি মতুর্জা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আজ প্রথম ম্যাচে দুপুরে টস জিতে ব্যাট করতে নামে সাকিবের লাল দল। ইনিংসের সূচনা করেন তামিম ইকবাল ও এনামুল বিজয়। তাণ্ডব চালিয়ে সেঞ্চুরি করেছেন তামিম। তবে বিজয় ফিরেছেন অল্প রানে। মোস্তাফিজের বলে সাজঘরে ফিরেন তিনি।
১০৩ রানে তামিম রিটায়ার্ড হার্ট হওয়ার পর ফিরেন সাব্বিরও।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৪২ ওভার শেষে লাল দলের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৪৪ রান।
সবুজ দলের পক্ষে তাসকিন আহমেদ শিকার করেছেন দুটি উইকেট। একটি করে নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও সাইফউদ্দিন।
মাশরাফি বিন মর্তুজার দল : ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, নাজমুল হোসেন শান্ত, নাসির হোসেন , মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আবু জায়েদ রাহি, মোস্তাফিজুর রহমান ও নাজমুল ওপু।
সাকিব আল হাসানের দল : তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, আরিফুল হক, তাসকিন আহমেদ, সানজামুল ইসলাম, আবু হায়দার রনি, রুবেল হোসেন ও আবুল হাসান রাজু।
২০১৭-তেও সাকিব
হাঁটি হাঁটি পা পা করে প্রথমবারের মতো ১৯৮৬ সালে সীমিত ওভারে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখে বাংলাদেশের ক্রিকেট। তারও ১৪ বছর পর ২০০০ সালে হয় টেস্ট অভিষেক। দীর্ঘ সময়ের এ পথচলায় অতীতের কিছু বছর বাদ দিলে টাইগাররা এখন অকুকোভয়। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে দারুণ কিছু পারফরম্যান্স দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে টাইগার দল সক্ষম হয়েছে নজর কাড়তে। ফলাফল- বিশ্ব এখন সমীহ করছে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে। শুধু দলীয় নয়, ব্যক্তিগত অর্জনেও পিছিয়ে নেই টাইগাররা। সাকিবই বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার যিনি তিন ফরম্যাটেই অলরাউন্ডার র্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থানে থাকার গৌরব অর্জন করেছেন। গত বছরতো ছাপিয়ে গেলেন অনেককেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সালটা ছিল সাকিবময়।
টেস্ট ও টি-২০ ক্রিকেটের আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে ২০১৭ সালে অলরাউন্ডার ক্যাটাগরিতে শীর্ষস্থানে থেকেই বছর শেষ করেছেন সাকিব। অন্যদিকে ওয়ানডে র্যাংকিংয়েও সাকিবের অবস্থান খুব একটা খারাপ ছিল না। মোহাম্মদ হাফিজের কাছে শীর্ষস্থান হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাকে। এটা ছিল সাকিবের তাক লাগানো অর্জন।
গত বছরের শুরুতে ছিল নিউজিল্যান্ড সফরে প্রথম টেস্টে তিনি খেলেছিলেন ২১৭ রানের এক মহাকাব্যিক ইনিংস। যেটি টেস্টে বাংলাদেশের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত অর্জন। আর একই ইনিংসে মুশফিকের সাথে পঞ্চম উইকেট জুটিতে গড়েছেন ৩৫৯ রানের পার্টনারশিপ রেকর্ড। শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশের শততম টেস্টেও জয়ের নায়ক ছিলেন সাকিব। ওই টেস্টে প্রথম ইনিংসে সাকিব ১১৬ রানের দারুণ এক ইনিংস উপহার দেন।
অনেকের মতে, বাংলাদেশ সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভালো করলেও টেস্টে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় দলগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল খুবই হতাশাজনক। সেই সমালোচনার জবাবও দিলো টাইগার বাহিনী। মিরপুর টেস্টে সব সমালোচনার জবাব দেয়ার দারুণ একটা সুযোগ তৈরি করে দেয় মুশফিক-সাকিব। মূলত সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়াকে হারায় বাংলাদেশ। যেখানে সাকিবের একটি বিশ্ব রেকর্ডও হয়ে যায়। যেটি ছিল একই ম্যাচে কোনো অলরাউন্ডারের ১০ উইকেট ও হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড। এরপরই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কার্ডিফের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে চমকে দেয়া ইনিংস। ২৬৬ রানের লক্ষ্যে ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পরেও সাকিব আর মাহমুদুল্লাহ অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। যেখানে সাকিব খেলেন ১১৪ রানের ম্যাচজয়ী এক ইনিংস।
বছরজুড়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্সের পর বছরের শেষ দিকে এসে ক্রিকেট জগতের সব বড় বড় সংগঠন ও গণমাধ্যমের কাছ থেকে অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন সাকিব। যার মধ্যে রয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইএসপিএন ক্রিকইনফো, দ্য গার্ডিয়ান ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার মতো জনপ্রিয় সব গণমাধ্যমের বর্ষসেরা একাদশে সুযোগ পাওয়া।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com