করোনা ভাইরাসে কাঁপছে আখাউড়া স্থলবন্দরের সীমান্ত বানিজ্য। ভারতীয় বিএসএফসহ বন্দরে কর্মরত ১০ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর চরম সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ-ভারত আমদানী রফতানী বানিজ্য। শুরুতে ৪৮ ঘন্টা, পরে ৬দিনের জন্য সীমান্ত বানিজ্য বন্ধের ঘোষণা দেয়া হলেও বাস্তবে বন্দরের বানিজ্য কখন চালু হবে কেউ বলতে পারছে না। করোনা সংকটে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে আখাউড়া স্থলবন্দরের সমস্ত ব্যবসা বানিজ্য। আজ বৃহস্পতিবার আখাউড়া ও আগরতলার ব্যবসায়ি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানাগেছে।
বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কর্মাসের ত্রিপুরা চ্যাপ্টারের সাধারন সম্পাদক সুজিত রায় জানায়, গত ৬ জুন আখাউড়া-আগরতলা স্থলবন্দরে কর্মরত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) জওয়ানসহ ইমিগ্রেশনে কর্মরত কিছু কর্মীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। করোনা রোগী শনাক্তের পরই ভারত সরকার আগরতলা স্থলবন্দরকে লকডাউন ঘোষনা করে। রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করে ত্রিপুরা সরকারের তরফে আগরতলা স্থলবন্দরকে স্যানিটাইজ (জিবানুমুক্ত) করতে ৪৮ ঘন্টার জন্য আমদানী রফতানী বানিজ্য বন্ধ করা হয। পরে বন্দরে কর্মরত বিএসএফসহ তিনশতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ শুরু হওয়ায় আমদানী রফতান বানিজ্য চালু করা যায়নি।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ; সাতদিনে আক্রান্ত ১৮৪ জন
তিনি আরো জানান, ভারত-বাংলাদেশ আমদানী রফতানী কারকরা যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আগামী ১২ জুন পণ্য আমদানি-রফতানি চালু করা হবে। কিন্তু করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ ও রিপোর্ট সংগ্রহের কাজ শেষ না হওয়ায় কখন সীমান্ত বানিজ্য চালু হবে তা নিশ্চিত করে তিনি বলতে পারছেন না।
তিনি আরো জানান, আখাউড়া স্থলবন্দরের ভারতীয় অংশ স্যানিটাইজ করা হয়েছে। বাংলাদেশ অংশকেও স্যানিটাইজ করার জন্য বলা হয়েছে। বাংলাদেশ অংশও স্যানিটাইজ করা হবে বলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ি নেতারা তাকে জানিয়েছেন। পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় ত্রিপুরাসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর লোকজন খানিকটা সমস্যায় রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় নিষ্ক্রিয় করা হলো উদ্ধার হওয়া মর্টার শেল
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানী রফতানী কারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জানান, আখাউড়া স্থলবন্দর স্যানিটাইজ করার জন্য ব্যবসায়িরা উদ্যোগ নিয়েছে। জীবনু মুক্ত করতে সুরক্ষা সামগ্রী আনা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ভারতীয় ব্যবসায়িরা শুরুতে ৪৮ ঘন্টার সময় বেধে দিলেও পরে ১২জুন শুক্রবার পর্যন্ত আমদানী রফতানী বানিজ্য বন্ধ থাকবে বলে জানায়। আজ ১১ জুন রাত ৯টা পর্যন্ত ভারতীয় ব্যবসায়িরা ব্যবসা চালুর ব্যাপারে কিছু জানায়নি বাংলাদেশী ব্যবসায়িদের। তাই ১২ তারিখের পর ব্যবসা চালু হবে কি না তাও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না তিনি।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় করোনা ভালো হওয়ার পর মারা গেলেন ব্যবসায়ি
তিনি আরো জানান, করোনা আতঙ্কে ভারতীয় ব্যবসায়িরা স্থলবন্দরমুখী হচ্ছে না। ব্যবসায়িদের মধ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগ পর্যন্ত আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানী রফতানী বানিজ্য চালু হবে না বলেও তিনি ধারণা করছেন।
তিনি আরো বলেন, স্থলবন্দরের ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ থাকায় সরকার বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রফতানী খ্যাতে বাংলাদেশের প্রধান স্থলবন্দর হিসাবে খ্যাত আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ থাকায় ছোট ছোট ব্যবসায়ি ও শ্রমিকরা অর্থ সংকটে পড়েছে। দ্রুত বন্দরের ব্যবসায়ি বানিজ্য চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com