ব্রেকিং

x

আখাউড়া হাসপাতালের দুরবস্থা, বেসিনে সাবান পেলেন না সিভিল সার্জন!

শনিবার, ১৬ মে ২০২০ | ৬:৫৫ অপরাহ্ণ

আখাউড়া হাসপাতালের দুরবস্থা, বেসিনে সাবান পেলেন না সিভিল সার্জন!

আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকতেই দুইটি বেসিন বসানো আছে করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি ঠিক রেখে আগতরা যেন হাত ধুয়ে প্রবেশ করতে পারেন। আজ শনিবার দুপুরে হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে বেসিনের সামনে গিয়ে সাবান খুঁজে পান নি সিভিল সার্জন।


হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রবেশ পথের সামনে থাকা একটি পুরোনো বালুর বস্তা দেখেও সিভিল সার্জন বলে উঠলেন, এটি ভালো দেখাচ্ছে না। হাসপাতালের দোতলায় রোগীদের ওয়ার্ডে গিয়ে বাথরুমের ‘করুণ দশা দেখেও সিভিল সার্জন অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিনা অনুমতিতে শাহনাজ রশিদ নামে এক চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকার বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন সিভিল সার্জন।


এদিকে খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে হাসপাতালের দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ জাসদ আখাউড়া উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক মো. জালাল উদ্দিন জালু। দাঁতের চিকিৎসার একটি দামী যন্ত্র দীর্ঘ দিনেও চালু না করার অভিযোগ তুলেন তিনি। পাশাপাশি তিনদিন ঢাকায় অবস্থান করে আখাউড়ায় এসে কোয়ারেন্টিনে না গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. রাশেদুর রহমান স্বাস্থ্যবিধি লংঘন করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ আনেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো একরাম উল্লাহ জানান, কিছু কিছু বিষয় ঠিক করতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে চিকিৎসক অনুপস্থিত আছেন তিনি অসুস্থ বলে কাগজপত্র পাঠিয়েছেন। এসব কাগজপত্র ঠিক আছে কি-না সেগুলো যাচাইয়ের জন্য বলা হয়েছে। ইউএইচএফপিও অফিসিয়াল কাজে ঢাকায় যাওয়ার বিয়ষটি মৌখিকভাবে অবগত করে যান। এখন স্বাস্থ্যবিধিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। উপসর্গ না থাকলে প্রয়োজন ছাড়া নমুনা নেয়া হচ্ছে না। প্রাতিষ্ঠানিক সেন্টার বাদে বাড়িতেও আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে। যে কারণে ইউএইচএফপিও’র কোয়ারেন্টিনের বিষয়টিও সেভাবে দেখা হচ্ছে’।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ বেলা ১২টার দিকে তাঁর কার্যালয়ের বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে নিয়ে প্রথমে আখাউড়া স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে যান আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। গাড়ি থেকে নেমেই তিনি প্রথমে জরুরি বিভাগের বাইরে রাখা বেসিনের সামনে যান। বেসিনে সাবান না থাকার বিষয়টি বলতেই হাসপাতালের ভেতরের কোনো একটি কক্ষ থেকে দুইটি সাবান নিয়ে রাখা হয়। এ সময় বালুর পুরোনা বস্তা দেখে তিনি সেটি সরাতে বলেন। রোগীদের ব্যবহৃত বাথরুম অপরিস্কার থাকা ও কক্ষের জানালার গ্লাস ভাঙ্গা দেখে তিনি এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন। সিভিল সার্জন চিকিৎসকদের থাকার ব্যবস্থাও ঘুরে দেখেন।

এ সময় তিনি ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসকদের মনে সাহস জোগান। বলেন, ‘অনেক বৈরি পরিস্থিতির মধ্যে আমাদেরকে কাজ করতে হচ্ছে। অনেক প্রতিকুলতা আছে। কিন্তু যা আছে সেটুকু নিয়ে মানুষের সেবা দিতে হবে। পিছিয়ে পড়লে চলবে না।’

এদিকে ইউএইচএফপিও’র কক্ষে বসে সিভিল সার্জন দাপ্তরিক বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নেন। এ সময় জাসদ নেতা অভিযোগ করেন, তিনি কয়েকদিন হাসপাতালে ঘুরে গেলেও দাঁতের চিকিৎসা করাতে পারেন নি। দাঁতের চিকিৎসকার জন্য আনা দামী যন্ত্রটি দীর্ঘদিনেও চালু করা হয় নি।

চিকিৎসক শাহনাজ রশিদ অনুপস্থিত থাকা নিয়ে অনেক সময় আলোচনা হয়। জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতির শুরুর দিকে ওই নারী চিকিৎসক করোনা উপসর্গ নিয়ে অসুস্থতার কথা বলে ঢাকায় চলে যান। ঢাকায় গিয়ে ওনার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে নেগেটিভ আসে। কিন্তু এরপরও তিনি কর্মস্থলে আসেন নি। এ বিষয়ে একাধিকবার কারণ দর্শানোর চিঠি দেয়া হয়। তিনি মেইলে পাঠানো উত্তরের সঙ্গে চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু কাগজও পাঠিয়ে দেন।

একটি সূত্র জানায়, ওই নারী চিকিৎসকের ঘনিষ্টজন আছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বড় পদে। যে কারণে সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি জেনেও মুখ খুলছেন না। চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়েও ওই সূত্রটি সন্দেহ প্রকাশ করেন। সূত্রটির দাবি, মূলত করোনা পরিস্থিতিতে ওই নারী চিকিৎসক আসতে চাইছেন না।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!