ব্রেকিং

x

আখাউড়া স্থলবন্দরে ‘লাগেজ পার্টি’ নামে একটি চোরাচালীন চক্র সক্রিয়

শনিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৮ | ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

আখাউড়া স্থলবন্দরে ‘লাগেজ পার্টি’ নামে একটি চোরাচালীন চক্র সক্রিয়
ছবি-অনলাইন

আখাউড়া স্থলবন্দরে ‘লাগেজ পার্টি নামে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী চোরাচালানী চক্র। কাষ্টমসের অসাধু কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে শুল্ক ফাকি দিয়ে দেদারছে লাগেজ পার্টি নিয়ে আসছে ভারতীয় পন্য। অধিক মুনাফা লাভ করতে কাষ্টমসকে ম্যানেজ করে স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী এইস করছে। ভারতের ভিসা ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এইসব পাসপোর্টধারীরা বৈধ পথে লাগেজ ভর্তি করে অবৈধভাবে ভারতীয় পন্য নিয়ে ফিরছে। সরেজমিন খবর নেয়ার সময় এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে।


জানাগেছে, আখাউড়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অর্ধশতাধিক লোক লাগেজ পার্টির সদস্য। কেউ নিজেরা পুজি খাটিয়ে লাগেজ ভর্তি করে মাল নিয়ে আসছে আবার কেউ কেউ কেউ ব্যবসায়ীদের অধীনে লাগেজ পার্টির ব্যবসা করছে। লাগেজ পার্টির সদস্যরা আখাউড়া স্থলবন্দরের নিকটবর্তী ভারত ত্রিপুরারাজ্যের রাজধানী আগরতলা গিয়ে শাড়ী, থ্রিপিস, তৈরী পোশাক, পাঞ্জাবী, জুতা, প্রসাধনসামগ্রী, ইমিটেশন গয়না, গজ কাপড়, তালা-চাবি, মোবাইল ফোনসেট, ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ, বিছানার চাদর, গৃহস্থালি পন্য, ইলেকট্রিক পন্যসহ নানা ধরণের পণ্য নিয়ে আসে।


খোজ নেয়ার সময় আরো জানাগেছে, লাগেজ পার্টির সদস্যরা বারবার যাতায়াত করে দুইদেশের কাষ্টমসের কাছে পরিচিত হয়েগেছে। মালামাল বহনের সময় ভারতীয় কাষ্টমসকে ঠিকমত বকশিস হাতে ধরিয়ে দিলে জামেলা হয় না। তবে মাল নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করলে বকশিসের টাকা বেশী দিতে হয়। মাসুদ নামে এক ব্যক্তি এখানকার লাগেজ পার্টির বড় সদস্য বলে অনেকে বলেছেন। শুক্রবার হলে লাগিজ পার্টির চাপ থাকে বেশী।

এদিকে খোজ নিয়ে আরো জানাগেছে, শুল্ক কর আদায়ের চেয়ে শুল্ক কর ফাকি দিয়ে কিছু অসাধু কাষ্টমস কর্মকর্তার প্রকাশ্য যোগসাজশে এই লাগেজ পার্টির সদস্যরা প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার পন্য নিয়ে আসছে ভারত থেকে। নির্ভয়ে বীরদর্পে লাগেজ পার্টির সদস্যরা মাল নিয়ে যাতায়াত করলেও সাধারন যাত্রীদের হয়রানী করা হচ্ছে বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। তবে মাঝে মধ্যে বিজিবি সদস্যরা তল্লাশী চালিয়ে মালামাল জব্দ করার ঘটনা থাকলেও এই ক্ষেত্রে কাষ্টমস প্রায় নিরব ভুমিকায় রয়েছেন বলেও জানাগেছে।

এ ব্যপারে আখাউড়া স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন সাধারন সম্পাদক ফোরকান উদ্দিন খলিফা জানায়, ইদানিং লাগেজ পার্টির সদস্যের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় সাধারন যাত্রীর উপর চাপ পড়ছে। তাদের থেকে সঠিকভাবে শুল্ক কর আদায়ের দায়িত্ব কাষ্টমস কর্তৃপক্ষের।

এ ব্যাপারে স্থানীয় আখাউড়া দক্ষিন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: জালাল উদ্দিন বলেন, ইদানিং আখাউড়া স্থলবন্দরে লাগেজ পার্টির সদস্যদের দৌরাত্ব বেড়েছে বলে শুনেছি, শুল্ক কর ফাকি দিয়ে যদি ভারতীয় মালামাল আনা হয় তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবীও তিনি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে আখাউড়া স্থলবন্দর কাষ্টমস কর্মকর্তা শ্যামল কুমার বলেন, সঠিকভাবে শুল্ক আদায় হচ্ছে। কাষ্টমসের কেউ অনিয়মে জড়িত নয় বলে তিনি দাবী করে বলেছেন, এর চেয়ে বেশী তথ্য জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ ফরমপুরণ করে এখানে আসতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেছেন, ঠিকভাবে সরকারের রাজস্ব আদায়ে সহযোগীতা না করে যারা কতিপয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজস্ব ফাকিতে হাত মেলান, সেসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাষ্টমসে চাকরি করার দরকার নেই। (২৭ এপ্রিল বেনাপেল কাষ্টমস হাউজ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের এই বক্তব্য ধারণ করা হয় )

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!