আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের পূর্বপাড়ায় কথিত প্রেমিক আক্তার হোসেনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন এক কিশোরী। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করার দাবি করে গত চারদিন ধরে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন।
তবে গতকাল রবিবার বিকেল নাগাদ এ বিষয়ে কোনো সুরাহা হয় নি। কিশোরীর সঙ্গে কথিত প্রেমিকের বিয়ে দেয়া হবে বলা হলেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। কিশোরীর বোন জামাই বিদেশ থেকে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানানো হয়।
কথা হলে গতকাল রবিবার দুপুরে কিশোরীর মা এ প্রতিবেদককে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি বাড়িতে (ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাকাইল গ্রাম) চলে এসেছি। গতকাল (শনিবার) রাত আটটায় বিয়ে হবে বলে আমাকে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা কি করেছে আমি এখনও জানি না।’
বিষয়টির তদারকিতে থাকা আখাউড়া মনিয়ন্দ গ্রামের মো. জালাল মিয়া নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা সভা করে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন করা যায় নি। দুই একদিনের মধ্যে মেয়েটির বোন জামাই বিদেশ থেকে এলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ তবে কি সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেটা বলতে তিনি রাজি হন নি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছেলে তো বিয়ে করতে রাজি। কিন্তু সে বললেই তো আর হচ্ছে না। তার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। এজন্য বিষয়টি নিয়ে একটু ঝামেলা আছে। সবকিছু বিবেচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদেরকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাকাইল গ্রামের ওই কিশোরীর জন্মনিবন্ধন অনুযায়ি বয়স ১৯ বছর। পরিবারের লোকজনের দাবি, বাকাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সে। তবে সে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে পড়াশুনা করছে। অন্যদিকে কথিত প্রেমিক আক্তার হোসেন মনিয়ন্দ পূর্বপাড়ার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। সদ্য প্রবাস ফেরত আক্তার এক সন্তানের জনক।
ধর্ষণের শিকার মেয়েটি স্থানীয় লোকজনকে জানায়, মনিয়ন্দে বোনের বাড়িতে যাওয়া-আসার সুবাদে তার সঙ্গে আক্তারের পরিচয় হয়। মাস দুয়েকের সম্পর্কে বিয়ের কথা বলে গত সোমবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় আক্তার। একটি আবাসিক হোটেলে রেখে তাকে দুই দিন জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে তার এক বোনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে বিয়ের কথা বললে টালবাহানা শুরু করে আক্তার। গত বুধবার তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুহিলপুর এলাকায় রেখে পালিয়ে যায় আক্তার। বিষয়টি তিনি পরিবারের লোকজনকে অবহিত করেন। উপায়ন্তু না দেখে বৃহস্পতিবার থেকে তিনি কথিত প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেন।
কিশোরী বলেন, ‘আমার জীবনডা শেষ করছে আক্তার। আমারে হে নষ্ট করছে। আমারে বিয়া করব লোভ দেহাইয়া নষ্ট করছে। আমি তারে অই বিয়া করুম। বিয়া না করলে আমি এই হান অই বইয়া থাহুম। আর নাইলে আমি আত্মহত্যা করুম।’ বিয়ের প্রলোভনে পড়ে ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীর এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন।
ওই কিশোরীর মা বলেন, ‘আমি ত টেহার লোভী না। আমি অহন ইজ্জতের কান্দা কানতাছি। যার লাইগ্যা আমার মাইয়ার ইজ্জত গেছে হের লগে অই দিয়া যামু। আমি এই দোষী মাইয়ারে আমি বাড়িত নিতাম না। যার লাইগ্যা ইজ্জত গেছে মাইয়া হের লগেই থাক। এমুন কলঙ্ক যে আমার মাইয়ার অইব তা বুঝতাম পারতাছি না।’
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com