আখাউড়া মনিয়ন্দ গ্রামে বিয়ের দাবীতে আক্তার হোসেন (২৮) নামে এক প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছে এক প্রেমিকা। বৃহস্প্রতিবার থেকে অনড় মনোভাব নিয়ে অনশন করে চলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বড় বাকাইল গ্রামের শাহেদা বেগম (১৯)। প্রেমিক আক্তারের আত্মীয় স্বজনের চাপ সত্যেও দাবী থেকে সরে আসেনি শাহেদা। একজন পুলিশের সোর্স অর্থ দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বিকাল ৭টায় সরেজমিন খোজ নেয়ার সময় শাহেদা তার মাকে নিয়ে আক্তারের বাড়িতে অবস্থান করছিল।
শাহেদা বেগম জানায়, মনিয়ন্দ গ্রামের পূর্বপাড়ায় তার বোনের বাড়িতে দেড় মাস আগে পরিচয় হয় আক্তারের সাথে। এই পরিচয় থেকেই প্রেম হয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত সোমবার তাকে বাড়িতে বের করে নিয়ে আসে আক্তার। স্ত্রী পরিচয়ে বুধবার পর্যন্ত আখাউড়ার একটি হোটেলে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে একসাথে রাত কাটায় তারা। পরে তাকে বিয়ে করতে অসম্মতি জানালে বৃহস্প্রতিবার সে বিয়ের দাবীতে মনিয়ন্দ আক্তারের বাড়িতে ছুটে আসে।
তিনি আরো জানান, আক্তার তার সাথে প্রতারণা করেছে। অনেক মিথ্যাচার করেছে। আক্তার আগের বিয়ের বিষয়টি তার সাথে গোপন করেছে। তারপরও সে আক্তারকে বিয়ে করতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন।
শাহেদার মা মমতাজ বেগম (৫৫) জানায়, আজ শুক্রবার তিনি মেয়ের এই খবর পেয়ে মনিয়ন্দে এসেছেন। তার মেয়েকে প্রেমের ফাদে ফেলে আক্তার যে অপকর্ম করেছে তা বিয়ে ছাড়া কোনোভাবেই নিষ্পত্তি সম্ভব নয়।
তিনি আরো জানান, বৃহস্প্রতিবার সন্ধ্যায় বিয়ে কথা বলে স্থানীয় কিছু সরদার শাহেদাকে শান্ত করে বোনের বাড়িতে পাঠায় কিন্তু আজ শুক্রবার বিকালে জালাল সরদার আসলেও তা সুরাহা করেনি, ইফতারির পর দেখবে বলে চলে যান তিনি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭টায় মেয়েকে নিয়ে আক্তারের বাড়িতেই অবস্থান করছেন তিনি।
তিনি আরো বলেছেন, আমার মেয়ের জন্ম হয়েছে ৮ই ডিসেম্বর ১৯৯৯। জন্মনিবন্ধনে তা লেখা আছে কিন্তু কিছু লোক মেয়ের বিয়ের বয়স হয়নি বলে প্রচার করছে। তিনি আরো বলেছেন, তার মেয়ের হাতে বিষের বোতল নেই।
এদিকে স্থানীয় কিছু লোকজন জানায়, প্রভাবশালী জালাল ও পুলিশের সোর্স নামে খ্যাত জামাল বিষয়টি নিয়ে বানিজ্য করার চেষ্টা করছে। এরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের জানাতে রাজি নয়। মেয়েটাকে কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করার চেষ্টা করছে। তবে জালাল বলেছেন, তিনি বিষয়টি শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির চেষ্টা করছেন, ছেলে বিয়ে করতে রাজি কিন্তু মেয়ের আত্মীয় স্বজনরা তালবাহানা করছেন। জামাল বলেছে সে পুলিশের সোর্স নয়, আক্তার তার ভাগিনা হলেও সে এই ব্যাপারে কিছু জানেনা।
এদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম জানায়, বিষয়টি তিনি জানেন কিন্তু তাকে এরিয়ে আক্তারের আত্মীয়স্বজনরা বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য বিনা বেগম জানায়, বৃহস্প্রতিবার বিষয়টি নিয়ে কথা হয় দুইপক্ষের সাথে। আক্তার হোসেন বিয়ে করতে রাজি হলেও পরে দেনমোহর নিয়ে আপত্তি জানানোর কারণে বিয়ে হয়নি।
স্থানীয় মনিয়ন্দ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: কামাল ভুইয়া বলেছেন, এ ব্যপারে কেউ আমাকে কিছু জানায়নি। আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে বিষয়টি জেনেছেন বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেছেন, তিনি বিষয়টি জেনে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলেছেন।
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com