ব্রেকিং

x

ক্রিকেট জুয়া-১ম পর্ব

আখাউড়ায় জমজমাট ক্রিকেট জুয়া। এজেন্টের মাধ্যমে প্রতিদিন কোটি টাকা হাত বদল

রবিবার, ২২ এপ্রিল ২০১৮ | ৩:০৮ অপরাহ্ণ

আখাউড়ায় জমজমাট ক্রিকেট জুয়া। এজেন্টের মাধ্যমে প্রতিদিন কোটি টাকা হাত বদল

ক্রিকেট জুয়া-১ম পর্ব


আখাউড়ায় ক্রিকেট নিয়ে জমজমাট জুয়া খেলা চলছে। ভারতের আইপিএলকে কেন্দ্র করে আরো বেড়েছে। প্রতিদিন কোটি টাকা হাত বদল হচ্ছে। শহরের কিছু এজেন্টের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে এই সর্বনাশা জুয়া খেলা। শনিবার খোজ নিতে গিয়ে এই তথ্য জানাগেছে।


সরেজমিন খোজ নেয়ার সময় দেখাগেছে, বড়বাজার, লালবাজার, সড়কবাজার ও মায়াবী সিনেমাহল এলাকার কিছু দোকানে যুবকদের জটলা। প্রায় সবার মুখে মুখে ক্রিকেটের আলোচনা ও বিশ্লেষন। কেউ কেউ আবার অস্থিরতায় ভোগছেন। খেলা নিয়ে বার বার মোবাইল ফোনে কথা বলছেন। এদের একজন বলছেন পাঞ্জাবের পক্ষে কত? ২/১, আমার ২ হাজার। আরেকজন বলছেন কোলকাতা ৫ হাজার। গেইল আজকে আউট হয়ে যাবে ১০ রান করার আগেই লাগাও ১০ হাজার টাকা। ক্রিকেট খেলা নিয়ে আরো অনেক ধরণের কথোপকথন চলছিল এই সব স্থানগুলোতে।

জানাগেছে, ‘এটা এখন আখাউড়া শহরের প্রতিদিনের চিত্র’ আইপিএল কেন্দ্র করে বর্তমানে বেড়েছে। প্রতিদিন কোটি টাকা হাত বদল হচ্ছে এখন। কোন দল জিতবে, কোন খেলোয়াড় কত রান করবে? কত ওভারে কত রান হবে, পাওয়ার প্লে-তে কত রান আসবে? অমুক ক্রিকেটার হাফ সেঞ্চুরী না কি সেঞ্চুরী করবে টসে কোন দল জিতবে, কোন খেলোয়াড় কত উইকেট নেবে? ক্রিকেট জুয়ার বাজি চলে এসব নিয়ে।

ওরা আরো জানায়, স্কুল কলেজের ছাত্রদের থেকে শুরু করে, ব্যবসায়ী, শ্রমিক কর্মচারীও এই জুয়া খেলায় জড়িয়ে নি:স্ব হয়ে পড়ছে। রাধানগরের একজন ব্যবসায়ী নিজের বাড়ি বিক্রি করেছে। কিছু শ্রমিক কর্মচারী যা আয় করছে তা সবই লাগিয়ে দিচ্ছে ক্রিকেট জুয়ায়। এতে নি:স্ব হয়ে পারিবারিক অশান্তিতে ভোগছে তারা। স্কুল কলেজের ছাত্ররা ক্রিকেট জুয়ায় জড়িয়ে অভিভাবক মহলে চাপ সৃষ্টি করছে। টাকা জোগাড় করতে ঘরে চুরি পর্যন্ত করছে।  শুধু আখাউড়া পৌরশহর নয় এই জুয়া এখন উপজেলার সব গ্রাম অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। জুয়ার হারজিতকে কেন্দ্র পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জুয়ারী জানায়, ৫টি এজেন্টের মাধ্যমে চলছে এই রমরমা ক্রিকেটের জুয়া খেলা। কমিশনের ভিত্তিতে জুয়া খেলার সমস্ত অর্থ লেনদেন হয় নির্ধারিত ক্রিকেটে জুয়ার এজেন্টদের মাধ্যমে। খেলে শেষে এজেন্ট তার সুবিধাজনক স্থান ও সময়ে পরাজিত জুয়ারীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে জয়ী জুয়ারীর কাছে হস্তান্তর করেন। এজেন্ট জয়ী জুয়ারিদের কাছ থেকে টাকা হস্তান্তরের বিনিময়ে কমিশন পান।

এই জুয়ারী আরো জানায়, এই ক্রিকেট জুয়ার বাজিতে কেউ জয় লাভ করুক আর পরাজিত হোক কেউ বাজীর টাকা পরিশোধে গড়িমসি করেনা বরং বিকাশের মাধ্যমে এজেন্টদের নিকট টাকা পরিশোধ হয়ে যায়। প্রতিটি খেলায় এজেন্টের মাধ্যমে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরা হয়।

আখাউড়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ মো: সাকের বলেছেন, যে কোনো খেলা নির্মল আনন্দ দেওয়ার জন্য। কিন্তু যদি প্রতিটি বল বাজি ধরার বিষয় হয়ে দাড়ায়, তাহলে আর খেলার আনন্দ থাকে না। এ ধরণের জুয়া সামাজিক শান্তি বিনষ্টের কারণ হয়ে দাড়ায়। বড় কোনো সর্বনাশ হওয়ার আগেই এর লাগাম, টেনে ধরতে হবে।

এ ব্যাপারে আখাউড়া থানার ওসি তদন্ত আরিফ আমিন জানান, বিষয়টি শুনেছি, নজরদারী চলছে। ক্রিকেট জুয়া বন্ধে অভিযান চালানো হবে।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!