আখাউড়ায় ধানি জমিতে পাকা ঘর তৈরির হিড়িক পড়েছে। স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেন প্রকল্পের টাকা লুটপাট করতে একটি প্রভাবশালী মহল এই কাজ করছে। কেউ ধানি জমি ভাড়া নিয়ে ঘর করছে, আবার কেউ নিজের জমিতে করছে। প্রকল্পের জরিপসহ অধিগ্রহণ কাজে নিয়োজিতদের যোগসাজশে এই অপকর্ম হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে সরাইল-ধরখার হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নতি করা করছে সরকার। এই কাজে ৩ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা ব্যায় হবে। সড়কটি তিন ধাপে উন্নয়ন কাজ চলছে। প্রথম ধাপে পড়েছে আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে সরাইল পর্যন্ত ১২ দশমিক ২১ কিলোমিটার, নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭২ কোটি টাকা। দ্বিতীয় ধাপে সরাইল-ধরখার পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। তৃতীয় ধাপে করা হবে ধরখার থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩২ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন। এই উন্নয়ন কাজে বাকী টাকা খরচ হবে।শিগগিরই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে এখানে।
সরেজমিন খোজ নেয়ার সময় দেখাগেছে, কোটি কোটি টাকা ক্ষতিপুরণের আশায় ধরখার থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত যেসব এলাকায় সড়কটি নির্মানে জমি অধিগ্রহণ হতে পারে, সেসব এলাকায় একটি প্রভাবশালী মহল পাকা স্থাপনা গড়ে তুলছে। স্থলবন্দর এলাকা থেকে শুরু করে সাতপাড়া, দ্বিজয়পুর, আনন্দপুর, রহিমপুর, বঙ্গের চর গ্রামে অর্ধশতাধিক পাকা স্থাপনা গড়ে উঠেছে। ধানি জমিতে গড়ে তুলা হয়েছে এসব স্থাপনা। কেউ জমি ভাড়া নিয়ে ঘর তুলেছে, আবার কেউ নিজের জমিতেই গড়ে তুলেছে বড় বড় পাকা স্থাপনা। কেউ কেউ ব্যাংকে জমি মরগেজ রেখেও স্থাপনার কাজ করছে। সাতপাড়া এলাকায় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গড়ে তুলেছে বিশাল এলাকা জুড়ে স্থাপনা।কিছু এলাকায় খেতের ধান কেটে ইটের ঘর করা হচ্ছে। পাকা ঘর নির্মাণ করতে ঢালাইকাজে রডের সঙ্গে বাঁশও দেওয়া হচ্ছে। কেউ তৈরী করছে বিশাল সাইনবোর্ড।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, এই প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের কথা প্রকাশ হওয়ার পর একটি চক্র নতুন ঘর তৈরির তোড়জোড় শুরু করে। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কিছু কর্মকর্তা এবং স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে এই সব জমির মালিক ও স্থাপনা তৈরীকারীরা অধিগ্রহণের বিষয়টি জানতে পারেন। স্থানীয়রা আরো জানায়, কয়েকজন প্রভাবশালী জমি ভাড়া নিয়ে ঘর তৈরি করছেন। জমির মালিকদের সঙ্গে চুক্তি হলো—ঘর বাবদ যা লাভ হবে, তা দুই পক্ষ ভাগ করে নেবে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার রেইনা বলেছেন, নতুন করে যারা স্থাপনা করছে তারা ক্ষতিপুরণ পাবেনা। অনেক আগেই এই প্রকল্পের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই নতুন করে স্থাপনা করে ক্ষতিপুরণ পাওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি আরো বলেন, ধানি জমিতে যারা পাকা স্থাপনা তৈরী করেছে তাদেরকে এনে মুচলেকা নেয়া হয়েছে। তারপরও যদি তারা জমিতে স্থাপনা তৈরী করার চেষ্টা করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(পরবর্তী পর্বে থাকছে প্রভাবশালীদের নাম ও রাজনৈতিক পরিচয় এবং সর্বশেষ বিস্তারিত তথ্য)
আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com