ব্রেকিং

x

আখাউড়ায় গরুর হাট, টাকা গুনছেন মুখের লালা দিয়ে!

বৃহস্পতিবার, ০৯ জুলাই ২০২০ | ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ

আখাউড়ায় গরুর হাট, টাকা গুনছেন মুখের লালা দিয়ে!

বিশ্বজিৎ পাল বাবু:
২২ হাজার টাকায় ছোট্ট একটু গরু বিক্রি করলেন জব্বার মিয়া। টাকা হাতে পেয়ে মুখের লালায় গুণে কোমড়ে গুঁজে নিলেন। কথা হলে প্রথমে মুখোশ (মাস্ক) না থাকার বিষয়টি জানতে চাইলে এক গাল হেসে বললেন পকেটে আছে। এভাবে টাকায় গুণলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আছে শুনে আবারো হেসে নিলেন। এগিয়ে এসে হাটের তদারকিতে থাকা মো. জাহাঙ্গীর আলম জব্বার মিয়াকে বললেন, ‘ওনি সাংবাদিক। আপনার ভালোর জন্যই বলছে। সব সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।’ হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে এলাকায় মাইকিংও করা হয় বলে জানালেন জাহাঙ্গীর আলম।


এমন একাধিক দৃশ্য চোখে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গরুর বাজারে। রাধানগর কলেজপাড়ায় অবস্থিত ওই হাটটি সপ্তাহের একদিন প্রতি মঙ্গলবার বসে। চলতি বছর ইজারা না হওয়ায় আপাতত পৌরসভা নিজস্ব লোকবলের মাধ্যমে হাটটি পরিচালনা করা হচ্ছে।


মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে ওই হাটে যাওয়া। প্রায় দেড় ঘন্টার মতো অবস্থান নিয়ে দেখা যায় স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সংশ্লিষ্টরা জানালেন, সত্যিকার অর্থে গরুর বাজারে স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মানার কোনো উপায় নেই। বেলা পৌণে একটার দিকে বৃষ্টি নামলে স্বাস্থ্যবিধি মানার সুযোগটা থিতু হয়ে আসে। গোটা পঞ্চাশেক ক্রেতা-বিক্রেতা বেশ কিছু পশু (ছাগল) একটি মাত্র ছাউনির নীচে গিয়ে অবস্থান নেন। অনেকে ছাতা মাথায় খোলা আকাশের নীচেই ছিলেন। বিকল্প না থাকায় কেউ কেউ বৃষ্টিতে ভিজেছেন।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ বিক্রেতাই অসচেতন। মাঝ বয়সি থেকে শুরু করে অনেক বয়স্ক বিক্রেতারা নুন্যতম মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনও বোধ করেন নি। তবে বাজারে আসা ক্রেতাদেকে মাস্ক পড়ে থাকতে দেখা যায়। কালো রংয়ের গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন পৌর এলাকার তারাগণের বৃদ্ধ আসাদ ভূঁইয়া। গরুর দাম হাঁকে ৮০ হাজার টাকা। তবে সর্বোচ্চ ৫৮ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হয়েছে বলে জানিয়ে বিড়বিড় করছিলেন তিনি, ‘ভালো লাগতাছে না। কাস্টমার কম। এক-দুইবার আইয়া খালি দাম জিংগাইছে। ভাবতাছি আর বাজারে থাকতাম না।’ মাস্ক পড়েননি কেন বলতেই জানালেন আনতে ভুলে গেছেন।
শ্যামনগরের মো. হোসেন মিয়া চারটি ভেড়া নিয়ে হাটে এসেছেন। ওই বিক্রেতার মুখেও মাস্ক ছিলো না। জানালেন মাস্কটা পকেটে রাখা আছে। ধুমপানের অভ্যাস আছে বলে মাস্কটা খুলে রেখেছেন বলে জানানা প্রবীণ ওই ব্যক্তি।

হাটে আসা পৌর এলাকার লাল বাজারের মো. ফেরদৌস বলেন, ‘কেউ ইচ্ছে করলেই বাজারে এসে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারবেন না। বাজারটিতে বিশেষ করে বিক্রেতাদের বেশিরভাগই মাস্ক পড়ে আসেন নি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম হলো পশুর দাম অনেক বেশি।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!