ব্রেকিং

x

আখাউড়ায় ‘আমান উল্লা খান’ নামে এক করোনা যোদ্ধার গল্প

সোমবার, ১১ মে ২০২০ | ৯:১৮ অপরাহ্ণ

আখাউড়ায় ‘আমান উল্লা খান’ নামে এক করোনা যোদ্ধার গল্প
মো: আমান উল্লাহ খান

হার না মানা প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসকে পাত্তাই দিচ্ছেন না আখাউড়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা পরির্দশক মো: আমান উল্লাহ খান।জীবন বাজি রেখেই করোনার বিরুদ্ধে চলছে তার সংগ্রাম। গত দেড় মাস ধরে একদিনও ফরসুত দেয়নি নিজেকে। নিজের কর্মস্থল উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নে হোম কোয়ারেন্টাইন, নমুনা সংগ্রহ সংক্রান্ত কাজের সাথে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা লোকজন নিয়ম মানছে কি না তার খোজ খবর নিয়মিত রাখছেন যেমন তেমনি জনবহুল জায়গায় মানুষ সামাজিক দুরত্ব মানছে কি না তাও দেখছেন আবার করোনাকে মারতে জীবানুনাশক পানি ছিটিয়ে দিচ্ছেন নিজ উদ্যোগে।


জানাগেছে, প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় গত ৮ই মার্চ। প্রথম স্তরে যখন বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস আঘাত হানে তখন আখাউড়া উপজেলায় করোনা ভাইরাসের লেস মাত্র ছিল না। তখন থেকেই উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা পরির্দশক মো: আমান উল্লাহ করোনা যোদ্ধে নেমে যান। গত ১১ এপ্রিল উপজেলার আমোদাবাদ ও গঙ্গানগর গ্রামে তিনজনের শরীরে প্রথম আখাউড়ায় করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর সে আর বসে নেই। তার দায়িত্বরত মনিয়ন্দ উপজেলায় লকডাউন ভেঙ্গে নতুন কেউ এসেছে কি না তার খবর নেয়া শুরু করেন।


পরিবার পরিকল্পনা পরির্দশক মো: আমান উল্লাহ খান জানায়, গত ৩১ মার্চ দায়িত্বের প্রথম দিন এক ব্যক্তি গাজিপুর থেকে তার ইউনিয়নে প্রবেশের পরই হাজির হয়ে যান তার বাড়িতে। তাকে ও তার পরিবারকে অনেক বুঝানোর পর হোম কোয়ারেস্টাইনে থাকতে রাজি হয়, পরে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে বিষয়টি অবহতি করলে আনুষ্ঠানিক ভাবে হোম কোয়ানেরন্টাইোনে দেয়া হয় তাকে। এভাবে পর্যাক্রমে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, নরসিংদীহ, মুন্সিগঞ্জ, চট্টগ্রাম থেকে আগত আরো ১১টি পরিবার মনিয়ন্ধ ইউনিয়নে আসলে সাথে সাথে হোম কোয়ারেন্টাইন করতে তিনি ছুটে যান তাদের বাড়িতে, সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য দীর্ঘসময় ধরে তিনি বুঝাতে থাকেন। কেউ একান্তই না মানলে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করে সকলকে ১৪ দিনের হোম কোয়ান্টোইনে পাঠানের ব্যবস্থা করেন তিনি।

তিনি আরো জানান, যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন তারা হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলছেন কি না দেখার দায়িত্বও তিনি পালন করেন। প্রতিদিন ফলোআপ করেন সমস্ত কোয়ারেন্টাইনে থাকা লোকদের। যারা পরিবারের অন্যদের থেকে শারিরিক দুরত্ব, আলাদা ঘরে থাকা, খাবারের নিয়মসহ হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়মগুলো মানতে চাইতেন না তাদেরকে বুঝিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার কাজ করেছেন তিনি। এছাড়াও মনিয়ন্দ ইউনিয়নের জনবহুল জায়গায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে মানুষকে সচেতন করার কাজসহ করোনা ভাইরাস মারতে নিয়মিত বোতলে করে নিজ উদ্যোগে স্প্রে করছেন জীবানুনাশক।

এই পরিবার পরিকল্পনা পরির্দশক আরো জানান, যাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তাদের সঙ্গেও তিনি কাজ করছেন। ১৫ জনের নমুনা সংগ্রহের সহযোগী হিসাবে কাজ করেছেন তবে এ পর্যন্ত ১৪টি রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তিনি মনে স্বস্থি পেয়েছেন।

তিনি আরো জানান, আসন্ন রোজার ঈদ উপলক্ষে কেউ মনিয়ন্দ ইউনিয়নে আসছে কি না তাও খবর রাখছেন, কেই আসলেই ছুটে যাবেন হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার উদ্দেশ্যে। করোনা কালোকালীন তার এই কাজ অব্যহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন।

আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!