ব্রেকিং

x

মাদক মামলায় হান্নান মেম্বারের পরিবর্তে সেলিম জেলহাজতে। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি

রবিবার, ২৫ মার্চ ২০১৮ | ৭:৩৩ অপরাহ্ণ

মাদক মামলায় হান্নান মেম্বারের পরিবর্তে সেলিম জেলহাজতে। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি

মাদক মামলার আসামীর পরিবর্তে ১৫ দিন কারাভোগের পর ধরা খেলেন সেলিম মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তি। দীর্ঘ দিনের পলাতক আসামী আখাউড়া পৌর আওয়ামী স্বেচ্ছা সেবকলীগের সাধারন সম্পাদক ও ইউপি সদস্য হান্নান মেম্বারকে বাচাতে সেলিম মিয়া এখন বিনা দোষে জেলহাজতে। আজ রোববার জেলা জজ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবান বন্দি দেয়ার সময় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, ৫ নং আখাউড়া দক্ষিন ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য, আখাউড়া পৌর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক হান্নান মেম্বার (৩৫) মাদক মামলায় অনেক দিন ধরে পলাতক রয়েছেন। মামলা নম্বর জিআর ৫১১/১৪ মূলে তার পরিবর্তে গত ১১ মার্চ আখাউড়া কুড়িপাইকা (নুরপুর বন্দের বাড়ি) গ্রামের ফায়েজ মিয়ার পুত্র রিক্সা চালক সেলিম মিয়া হাজিরা দিতে গিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আটক হয়। ৭৩১ নম্বর মিস কেইস মূলে আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতে জামিনের জন্য সেলিম মিয়াকে হাজির করা হলে আইনজীবীদের মধ্যে প্রথমেই কানাঘুষা শুরু হয়। এক পর্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দরা বিষয়টি আদালতকে অবগত করালে আদালত ১৬৪ ধারায় সেলিম মিয়ার জবানবন্দি রেকর্ড করে। সেলিম মিয়া তার জবানবন্দিতে বলেছেন, একটি রিক্সা কিনে দেয়ার লোভ দেখিয়ে হান্নান মেম্বার তার নিজের স্থলে সেলিম মিয়াকে আদালতে হাজির করে। আদালত তার জবানবন্দি গ্রহন করে সেলিম মিয়াকে জেলহাজতে পাঠায় এবং সংশিষ্ট ধারায় সেলিম ও হান্নান মেম্বারের বিরুদ্ধে আইনানু ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রসিকেশনের নির্দেশ প্রদান করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক শফিউল আলম লিটন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, আইনজীবী সমিতি বিষয়টি জেলা জজ আদালতকে মৌখিক ভাবে জানালে আদালত সেলিম মিয়ার জবানবন্দি নেয় এবং সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে শোকজ করা হয়। তিনি ঘটনাটিকে দু:খজনক ঘটনা উল্লেখ্য করে বলেছেন হান্নান মেম্বার মাদক মামলায় পলাতক আসামী হলেও আখাউড়া প্রকাশ্যে ঘুরেছে। প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলগুলোতে তার ছিল অবাধ বিচরণ।
সেলিম মিয়ার বাবা ফায়েজ মিয়া (৮০) জানায়, অর্থের লোভ দেখিয়ে আমার সন্তানকে হান্নান মেম্বার জেলে পাঠিয়েছে। তিনি আইনজীবী ও হান্নান মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করেও নিদোর্ষ সন্তানকে জামিনে মুক্ত করতে পারেনি বলেও জানান।
এদিকে হান্নান মেম্বারের এই অপকর্মের ঘটনায় এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা টের পেয়ে হান্নান মেম্বার কয়েক দিন আগেই দেশ ছেড়ে ভারতের ত্রিপুরায় পালিয়েছে বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে। একাধিক মাদক মামলার পলাতক আসামী এই হান্নান মেম্বার সম্পর্কে আখাউড়ায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। সম্প্রতি এই হান্নান মেম্বার দক্ষিন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী হিসাবে এলাকায় পোষ্টার ফেষ্টুন ব্যানোর লাগিয়ে প্রচারে নেমেছিল।
এ ব্যপারে হান্নান মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আখাউড়া দক্ষিন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: জালাল উদ্দিন জানায়, লোক মুখে তার এই ঘটনা তিনি শুনেছেন, কযেক বার ফোনেও কথা হয়েছে কিন্তু অফিসিয়াল ভাবে তাকে এ ব্যপারে কিছু জানানো হয়নি, ইউনিয়ন পরিষদের গত মাসিক সভায় সে অংশগ্রহন করেনি বলেও তিনি জানান।
এ ব্যপারে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক তাকজিল খলিফা কাজল জানায়, হান্নান মেম্বার পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক হলেও তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে তাদের জানা নেই। অভিযোগ প্রমান হলে দলীয় ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামছুজ্জামান জানায়, ইউপি সদস্য হান্নান মেম্বারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে তার কার্যালয়ে কোন তথ্য দেয়া হয়নি। তবে এমন অভিযোগের প্রমান প্ওায়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।



আখাউড়ানিউজ.কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, কপিরাইট আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com

error: Content is protected !!